![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_386249_1.jpg?t=1719536803)
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ সম্মেলন মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধান অতিথি হিসেবে কুয়ালালামপুরের মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে সেমিকন সাউথইস্ট এশিয়া ২০২৪ সামিটের উদ্বোধন করেন। সেমিকন সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, তার সরকার মালয়েশিয়াকে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে গবেষণা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য তিনি বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুসংহত গবেষণা পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত গবেষণা কেন্দ্রগুলোর সমন্বয়ে একটি কৌশলগত কাঠামো গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মতে একটি শক্তিশালী বহুজাতিক সেমিকন্ডাক্টর
উৎপাদন খাত মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার
ইব্রাহিম বলেছেন, স্থানীয় সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে প্রসারিত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে মালয়েশিয়া
৬০ হাজার স্থানীয় প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শিল্পোযোগী করে তুলতে কাজ করছে, যা মালয়েশিয়ার
জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর কর্মকৌশল এর পাঁচটি প্রধান বৈশিষ্ট্যের একটি।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের
(বিএমসিসিআই) ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চেম্বার সভাপতি সাব্বির এ খানের নেতৃত্বে
তিন দিনব্যাপী সেমিকন সাউথইস্ট এশিয়া ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সম্মেলন
উদ্বোধনের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সব প্যাভিলিয়ন ও স্টল পরিদর্শন করেন, যেখানে
তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বাংলাদেশ বর্তমানে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প থেকে বার্ষিক প্রায় ৫ মিলিয়ন
ডলার আয় করে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ডিজাইনের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সরকার ২০৩১ সালের মধ্যে
১০ বিলিয়ন ডলারের রফতানিমুখী সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্য ঠিক করেছে। ৬০০
বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বাজারটি এ দশকের শেষ নাগাদ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্পে রূপান্তরিত
হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ বৈশ্বিক বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এশিয়া-প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ বিশেষ করে মালয়েশিয়া কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।
বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের নেতৃস্থানীয় কোম্পানির কর্মকর্তাদের
সমন্বয়ে গঠিত এ প্রতিনিধিদলের লক্ষ্য দুই দেশের শিল্পের মধ্যকার সংযোগ স্থাপন, দ্বিপাক্ষিক
অংশীদারত্বের সুযোগ সৃষ্টি এবং বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের মধ্যে
অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের মাধ্যমে মালয়েশিয়া এ অঞ্চলে কীভাবে নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠল তা
প্রত্যক্ষ করা। বিএমসিসিআই প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া ডিজিটাল ইকোনমিক করপোরেশন (এমডিইসি),
মালয়েশিয়া এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এমএ ট্রেড), মালয়েশিয়ান ইনস্টিটিউট
অব মাইক্রোইলেক্ট্রনিক সিস্টেমস (এমআই এমওএস) এবং মালয়েশিয়ান সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি
অ্যাসোসিয়েশন (এমআই এমওএস) এর মতো মালয়েশিয়ার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের নেতৃস্থানীয়
সংস্থা ও সেখানকার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন। মালয়েশিয়ান ইনস্টিটিউট অব
মাইক্রোইলেক্ট্রনিক সিস্টেমসের (এমআই এমওএস) সহায়তায় বিএমসিসিআই প্রতিনিধিদল সেমিকন্ডাক্টর
নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে গৃহীত উদ্যোগ ও কার্যক্রমগুলো সরাসরি পরিদর্শন করছেন, যা ছিল
এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। মালয়েশিয়ার সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর
ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নকল্পে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।