মুনাফায় ফিরছে উপসাগরীয় চার দেশের ব্যাংক

বণিক বার্তা ডেস্ক

গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংকিং বাজার হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত কাতার। নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে দেশগুলোর ব্যবসায় সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস বলছে, জিসিসিভুক্ত চারটি দেশের ব্যাংকগুলো মহামারীর আগের সময়ের মতো মুনাফায় ফিরছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ মুনাফার হার আরো বাড়বে। মূলত জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, সুদের হার নতুন প্রকল্প বৃদ্ধির কারণে মুনাফা দেখতে শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। খবর ন্যাশনাল নিউজ।

বছরের শেষার্ধে মূল সুদের হার মার্জিনের কারণে উৎপাদন খরচের যে ঝুঁকি তা প্রশমিত হবে। এর মাধ্যমে আঞ্চলিক ব্যাংকগুলো ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ শেষে বেশি মুনাফার দেখা যেতে পারে।

এক প্রতিবেদনে রেটিং এজেন্সি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল জানিয়েছে, বছরের শেষার্ধে আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর জন্য আরো বেশি দৃশ্যমান শক্তিশালী অবস্থার পূর্বাভাস দিচ্ছি আমরা। উৎপাদন খরচসংক্রান্ত যে ঝুঁকি সেটিও মানিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রণোদনার কারণে কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবগুলো দীর্ঘায়িত হলেও চলতি বছর তার প্রভাব অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবে ব্যাংকগুলো। এসব কিছুই ব্যাংকগুলোর আয় বৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক হবে।

গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত কাতারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বাজার আদর্শ ঋণের হার বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ পঞ্চমবারের মতো সুদের হার বাড়ানোর পর পরই চার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন সিদ্ধান্ত নেয়। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় দ্রব্যমূল্য সহনশীল করতে ফেডারেল রিজার্ভ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল রিজার্ভের পথই অনুসরণ করেছে। কারণ তাদের মুদ্রার মান ডলারের মানের প্রায় পাশাপাশিই চলেছে।

বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কার মধ্যেই গত শুক্রবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৮৬ ডলার ১৫ সেন্টে। অন্যদিকে মার্কিন বাজার আদর্শ ডব্লিউটিআইয়ের দামও ব্যারেলপ্রতি দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৭৮ ডলার ৭৪ সেন্টে। তবে পরিমাণ কমে যাওয়ার পরেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় জ্বালানি তেলের দাম এখনো ১০ শতাংশ বেশি রয়ে গিয়েছে।

এসঅ্যান্ডপি বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে উচ্চ সুদের হার এবং কম ঝুঁকির প্রবণতাই মূলত ব্যাংকিং খাতকে চলতি বছর মুনাফার মুখ দেখিয়েছে। সৌদি আরবের আর্থিক খাতের কর্মকাণ্ড প্রায় মহামারী-পূর্ববর্তী সময়ের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। চলতি বছরের শেষার্ধে করপোরেট খাতের বড় ধরনের ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাতে ঋণপ্রবাহও শক্তিশালী হবে। ধীরে ধীরে সুদের হার বাড়ানোর কারণে সৌদি আরবের ব্যাংকগুলোর মার্জিন মুনাফাও বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলছে, বছর সৌদি আরব হবে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া অর্থনীতির দেশ।

এসঅ্যান্ডপির পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কুয়েতের ব্যাংকগুলোকে দ্রুত প্রবৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে বেসরকারি খাতে শতাংশ পর্যন্ত আমানত বাড়তে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন