স্মৃতিচারণ পর্ব-৮

আমাদের কালের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন

আবু এন এম ওয়াহিদ

দাওয়াতি কাজ শেষ হলে বেলা -৪টার দিকে আমরা দুজন গিয়ে হাজির হলাম পুরান ঢাকায় স্যারের এক ভায়রা ভাইয়ের বাসায়। সেখানে হাত-মুখ ধুয়ে মজা করে দুপুরের খাবার খেলাম। ঘণ্টার নোটিসে দুজন মেহমানের প্রতি এমন উদার আপ্যায়ন আতিথেয়তা বাঙালি মুসলমান সংস্কৃতির এক অনবদ্য রূপ। রূপ পৃথিবীর অন্য কোনো সমাজে আছে কিনা আমার জানা নেই। খাওয়া-দাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে গাড়িতে করে ফের ক্যাম্পাসে চলে এলাম। স্যার আমাকে তার বাসায় নিয়ে গেলেন। ড্রইংরুমে বসে বৈকালিক চা খেতে খেতে তার সঙ্গে অনেক গল্পও হলো। আমার এক বছরের জুনিয়র পরিসংখ্যান বিভাগের আব্দুল মতিনও সাংবাদিক ছিল, স্যার নাম বলতে গেলে মতিনের সঙ্গে আমাকে গুলিয়ে ফেলতেন। প্রসঙ্গটা মনে নেই, আড্ডার এক পর্যায়ে তিনি বলে উঠলেন, ‘বুঝলে মতিন, সিলেটের লোকজন কিন্তু এক্কেবারে সুবিধার না।কথাটা তাত্ক্ষণিক আমার হূিপণ্ডে তীরের মতো গিয়ে বিঁধল, তথাপি অনেক কষ্ট করে আমি স্বাভাবিক হয়েই রইলাম এবং কোনো দিন তাকে জানতে দিইনি, আমার বাড়ি সিলেট।

স্যারের বাসা থেকে বেরিয়েই দেখি গোটা ক্যাম্পাস উত্তাল, টালমাটাল! চারদিকে লক্ষ করলাম ছোট-বড় সব ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর ব্যস্ত আনাগোনা। বিভিন্ন দিক থেকে উত্তেজিত ছাত্ররা দলে দলে আসছে। মিছিলে মিছিলে গোটা ক্যাম্পাস সয়লাব। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত সারা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন। আকাশে- বাতাসে শোনা যাচ্ছে একই ধ্বনি-প্রতিধ্বনি—‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী মানি না, মানব না, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বাতিল করো, বন্ধ করো।আসলে কী হয়েছিল, সেটা এখন মনে করতে পারছি না, তবে কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল। সামষ্টিকভাবে ছাত্রসমাজ যে কতটা স্পর্শকাতর, উদ্দাম প্রাণোচ্ছল, সেটা সেই দিনই প্রথম অনুভব করেছিলাম। তাদের দিয়ে অনেক কঠিন কাজ করানো যায় আবার বেকায়দায় বিগড়ে গেলে তাদের সামাল দেয়া যায় না। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি মোকাবেলা করতে প্রায়ই ভুলে যায়, ‘Students matter most.

বিশ্ববিদ্যালয়ের চার দেয়ালের ভেতর থেকে শুধু দেখে দেখে যত কিছু শিখেছি, এর বাইরে থেকেও আমরা জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় এন্তার রসদ সংগ্রহ করেছি। আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রাবস্থায় আমি দুবার বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) যাওয়ার সুযোগ  পেয়েছিলাম। প্রথমবার গিয়েছি মর্নিং নিউজের সাংবাদিক বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য হিসেবে। তখন বিটিভি ছিলডিআইটিভবনে। ডিসেম্বর কি জানুয়ারি মাস। শীতের রাত, তাই বন্ধু শাহদাতের ম্যাজেন্টা রঙের স্লিভলেস সোয়েটারটি ধার করে নিয়েছিলাম। আমাদের অনুষ্ঠান লাইভ কাস্ট করা হয়েছিল। সঞ্চালক ছিলেন আজকের নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু। শুরুতে তিনি একটি কথা বলেছিলেন, “আপনাদের প্রশ্ন করলে উত্তর দেবেন, কিন্তুদেখুনবলে বাক্য আরম্ভ করবেন না।” ‘দেখুনশব্দে উপস্থাপকের কেন এত আপত্তি ছিল তা আমি তখন বুঝিনি, এখনো জানি না। একথা ছাড়া সেদিনের কথোপকথনের আর কিছুই আজ মনে নেই।

দ্বিতীয়বার যখন গেলাম তখন বিটিভি রামপুরায় তার স্থায়ী ঠিকানায় চলে গেছে। উপলক্ষ ছিল টেলিভিশনে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া। তখন গরমের দিন, জুলাই-আগস্ট হবে হয়তোবা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যারা বিতর্ক করতাম, তাদের মধ্যে মনে পড়ে সৈয়দ গোলাম মোকাদ্দেস মুকুল, খন্দকার মাহবুব ইলাহী রঞ্জু, মোল্লা মবিরুল হোসেন, চৌধুরী ইমদাদুল হক বাচ্চুর কথা। যাদের নাম মনে করতে পারলাম না, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সেদিন আমাদের দলে রঞ্জু মবিরুল ছিল। আর কে ছিল মনে নেই, দলপতি কে ছিল তাও আজ বলতে পারব না। তপ্ত সূর্য যখন মধ্যগগন থেকে পশ্চিম দিকে মাত্র হেলতে শুরু করেছে তখন দুরু দুরু বুকে, শুকনো মুখে বিশাল দুর্গের মতো পাকা দালানে গিয়ে ঢুকি।

ঘণ্টা দুয়েক পর খুশিমনে হাসিমুখে নাচতে নাচতে বেরিয়ে আসি। মনে স্ফূর্তির দুটো কারণ ছিল। প্রথমত, আমরা বিতর্কে জিতেছিলাম। বিতর্কের বিষয়বস্তু কী ছিল, প্রতিদ্বন্দ্বী দল কোনটি ছিল তাও এখন স্মরণ করতে পারছি না। দ্বিতীয়ত, জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নগদ সম্মানী পেয়েছিলাম। চকচকা নতুন নোট হাতে পেয়ে কী যে খুশি লেগেছিল, বলে বোঝানোর ভাষা আমার জানা নেই! সে সময়ে ৫০ টাকা অনেক টাকাও ছিল। আমার যতদূর মনে পড়ে, আমাদের সঙ্গে দর্শক বন্ধু আরো দু-তিনজন ছিল। বিটিভি ভবন থেকে বের হলেই রঞ্জু বলল, ‘পাত্তি ফেল।আমরা অথবা ১০ টাকা করে দিলাম। তারপর কোথাও গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলাম। কোন রেস্তোরাঁয় কী খেয়েছিলাম সেসবও আজ দিব্বি ভুলে বসে আছি।

শিক্ষা সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে সঙ্গে আমার ছাত্রজীবনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো অনেক কিছু হয়েছে, যা অন্য প্রতিষ্ঠানেও হয়, যেমন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, জাতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন, দেশী-বিদেশী ভিজিটিং প্রফেসরদের বক্তৃতামালা, বিজ্ঞানমেলা, সাহিত্য প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠের আসর, কৌতুকাভিনয়, জাদু প্রদর্শনী, খেলাধুলা, বিদায় সংবর্ধনা, নবাগত সংবর্ধনা, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিভাগ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় খেলা, জাকসু নির্বাচন, বিভাগীয় নির্বাচন, মিটিং, মিছিল, আন্দোলন, ঈদে মিলাদুন্নবী, সরস্বতী পূজা, ছাত্রদের রাজনীতি, শিক্ষকদের রাজনীতি, ধর্মঘট, অনশন ধর্মঘট, ক্লাস বর্জন, পরীক্ষা বর্জন, ডাইনিং হলে মাগনা খাওয়া, ডাবল কাপ খাওয়া, কিলাকিলি, মারামারি, খুনোখুনিকী হয়নি! শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলন, তাও হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ইত্যাদি একেবারেই ছিল না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এসেছেন, তাদের অধিকাংশই সফল হয়েছেন, কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আবার কেউ কেউ আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে আশাতীত সাফল্য লাভও করেছেন। আমাদের সময়ে যারা সর্বনাশের শিকার হয়েছেন তাদের দুজনের কথা আমি একটু একটু জানি। যারা সফলতার স্বর্ণশিখরে উঠেছেন, তাদেরও দুজনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। যারা চরম মূল্য দিয়ে গেছেন তারা দুজনই ছিলেন ছাত্রনেতা। যারা সৌভাগ্য নিয়ে জন্মেছিলেন, তারা উভয়ই ছিলেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। প্রথমে শুনুন দুঃখের বয়ান, তারপর দেব সুখের সংবাদ।

আপনারা জানেন, দুঃখজনকভাবে জাকসুর প্রথম দ্বিতীয় সাধারণ সম্পাদক (জিএস) দুজনই খুনখারাবির শিকার হন। প্রথম জন ক্যাম্পাসের বাইরে, পরের জন ভেতরে। যিনি বাইরে মারা গেছেন, তিনি সম্ভবত সমাহিত হয়েছেন তার গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরস্তানে। যিনি বিশ্ববিদ্যালয় চৌহদ্দির ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তার কবর হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতেই। প্রথম জনের নাম শাহ্ বোরহান উদ্দিন রোকন, দ্বিতীয় জন মোজাম্মেল হক। রোকন ভাই প্রথম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি জাসদ-ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। মোজাম্মেল ছিল অর্থনীতি বিভাগে আমাদেরই সহপাঠী। সে করত তত্কালীন সরকারি ছাত্রলীগ।

রোকন ভাই খুন হওয়ার মাৎর কয়ৎকে দিন আগের কথা। আমার ফ্লু হয়েছে, গায়ে জ্বর, খাওয়ায় কোনো রুচি নেই। অসুস্থ অবস্থায় সন্ধ্যার ঠিক আগে নং হলের ক্যান্টিন থেকে রুমে ফিরে আসছি, পথে তার সঙ্গে দেখা। তিনি আমাকে দেখে বললেন, ‘ওয়াহিদ, তোমার কী হয়েছে, তোমার মুখটা এমন শুকনো শুকনো লাগছে কেন?’ তখন রোকন ভাইয়ের চেহারায় লুুুুকানো যে দুশ্চিন্তা আর আতঙ্ক দেখেছিলাম, তাতে আমি ভাবছিলাম তাকে জিজ্ঞেস করি, ভাই, আপনাকে এমন লাগছে কেন? তার মাত্র কয়েক দিন পরই ছুরির খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত রোকন ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জের কাছে।

মোজাম্মেল আমাদেরই ক্লাসমেট ছিল। তত্কালীন নম্বর হলের এক্সটেনশনে তার নামে একটা রুম বরাদ্দ ছিল বটে, কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই সে বাইরে থাকত। তারও মারা যাওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে, একদিন বিকালবেলা আমি হাঁটতে বেরিয়েছি, যাচ্ছি নম্বর হল থেকেপ্রান্তিকগেটের দিকে। মোজাম্মেল উল্টো দিক থেকে মোটরসাইকেলে এসে রাস্তার মাঝখানে আমার সামনে থামল। হয়তো কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু বলেনি। আমি সাহস করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মোজাম্মেল, কেমন আছ? জবাব দিল, ‘কবরে যাওয়ার আগে কি আমাদের শান্তি আছে?’ তার এই হূদয় নিংড়ানো মর্মবেদনার কথা শুনে আমার ভীষণ খারাপ লেগেছিল। কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গেছে, ওই মুহূর্তে কারোরই করার কিছু ছিল না। একথা মোজাম্মেল নিজেও জানত।

এমন সময় আমার বেজার মুখে মুহূর্তের মধ্যে আবার একটা হাসির রেখাও ফুটে উঠল। এবার শুনুন সে গল্প। আমি একটুক্ষণের জন্য থমকে আছি চৌরাস্তার কাছাকাছি। একই লক্ষ্যে দ্রুতপায়ে আমাকে পাস করে যাচ্ছে আমাদের জুনিয়র, আমাদের বিভাগেরই ছাত্রআসগর উল্টো দিক থেকে আসছে বাংলা বিভাগের একটি মেয়ে, নামনিলু আসগর নিলুকে দেখেই বলল, ‘আন্টি, কোথায় চললেন?’ নিলু চট করে মুখের ওপর বলে দিল, ‘আঙ্কেলের সন্ধানে। নিলুর সাহস উপস্থিত বুদ্ধি দেখে আমি বিস্মিত অভিভূত না হয়ে পারলাম না। নিলু এখন আর নিলু নয়, পরিসংখ্যান বিভাগের আনোয়ার ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি আমাদের ভাবী, সবার ভাবী, শ্রদ্ধেয়া ভাবী।

তারপর দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই এক রাতে প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে বাথরুম থেকে নিজ কক্ষে ফিরে আসার পথে বারান্দায় মোজাম্মেল গুলিবিদ্ধ হয়, তার কয়েক দিন পরই ডিএমসি (ঢাকা মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে মারা যায়। দুর্বৃত্তরা মোজাম্মেলকে যখন গুলি করে ঠিক তখনই আমরা হলের টিভি রুমে নাটক দেখছিলাম এবং নাটকেও গোলাগুলি হচ্ছিল। ক্যাম্পাসের ভেতরে তাকে যখন কবর দেয়া হয় তখন আমি অকুস্থলে উপস্থিত ছিলাম। তার বাবাকে মাটিতে গড়াগড়ি করে কাঁদতে দেখেছি! কী হূদয়বিদারক দৃশ্য!

বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতির একটি বিশেষ গুরুত্ব তাত্পর্য আছে। ছাত্ররাই ১৯৭১- মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল, তারাই স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, নিয়ামক লড়াকু সৈনিক। সেই ছাত্ররাজনীতির কী দৈন্য আজ! ব্যর্থতার জন্য শিক্ষার্থীরা যতটা না দায়ী, তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী রাষ্ট্র, সমাজ, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা রাজনৈতিক নেতৃত্ব। দায় কম-বেশি সবার ওপরই বর্তায়।

এবার শুনুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সৌভাগ্যবান দুই পুরুষের কথা। প্রথম জন ছিলেন নম্বর হলের দারোয়ান আব্দুল লতিফ। আমরা তাকে লতিফ মিঞা বলে ডাকতাম। লতিফ মিঞা হলের বারান্দার পূর্ব প্রান্তে একটা চেয়ার-টেবিলে ভিজিটরস বুক নিয়ে বসে থাকতেন। তার বাড়ি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে কোনো এক গ্রামে, এখন হয়তোবা গুলশান-বারিধারায় তিনি থাকেন! তাকে সবসময় দেখতাম হাসিখুশি, কর্মচঞ্চল, দায়িত্ববান। অবসর বিকালে অথবা বৃষ্টিভেজা দিনে অনেক সময় লতিফ মিঞার সঙ্গে কথা বলেছি, গল্প করেছি, কিন্তু কখনো বুঝতে পারিনি তার মধ্যে লুকিয়েছিল এমন তেজি ব্যবসায়ী প্রতিভা।

অল্পদিনের মধ্যেই বুঝলাম চাকরির সঙ্গে সঙ্গে সমানতালে লতিফ মিঞা জমির দালালিও চালিয়ে যাচ্ছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে, অর্থাৎ রোববারে তার ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো, ঢাকা থেকে আসা জমির খদ্দেরদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাদের নিয়ে এদিক-সেদিক যাচ্ছেন এবং জমি দেখাচ্ছেন। কাজ লতিফ মিঞা এত দক্ষতা, নিষ্ঠা সততার সঙ্গে করেছেন যে মাত্র তিন-চার বছরের মধ্যে তিনি লাখ লাখ টাকার মালিক হয়ে গেলেন। চাকরি ছেড়ে পরিবহন ব্যবসা শুরু করলেন, বাস কিনলেন কয়েকটি, তারপর আর তাকে পায় কে! শনৈঃ শনৈঃ তার উন্নতি আর তরক্কি! আমরা যখন জাবি ছাড়ি তখনই তিনি কোটিপতি। যে সময়ের কথা বলছি তখন দেশে এত বড় ধনী মানুষ হাতেগোনা কয়েকজনই ছিলেন।

 

আবু এন এম ওয়াহিদঅধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি; এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন