জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা

প্রযুক্তি জায়ান্টদের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে জলবায়ুর ওপর যে প্রভাব পড়ে, তা নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিতে অবস্থান নিচ্ছে তারা। কিন্তু যখনই তাদের করপোরেট পরিচয় ব্যবহার করে আরো শক্তিশালী জলবায়ু নীতি প্রণয়ন করার কথা বলা হয়, তখন তারা একেবারে যেন অদৃশ্য হয়ে ওঠে। ইনফ্লুয়েন্সম্যাপ নামে একটি থিংকট্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

২০২০ সালে অ্যাপল, অ্যামাজন, গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, ফেসবুক মাইক্রোসফট সাড়ে লাখ কোটি ডলার লবিংয়ের পেছনে ব্যয় করেছে। তবে ২০২০ ২০২১- লবিংয়ের জন্য খরচ করা বিপুল অর্থের মাত্র শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে জলবায়ু নীতি সম্পর্কিত কাজে। ফেডারেল আইনের আওতায় লবিংয়ের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব কথা জানিয়েছে থিংকট্যাংক ইনফ্লুয়েন্সম্যাপ।

প্রতিবেদনে জলবায়ু নীতি সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিও বিশ্লেষণ করা হয়। বিশেষ করে কোন কোন আইন প্রণয়নে তারা লবিং করেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, পাঁচটির মধ্যে অ্যামাজন, অ্যালফাবেট মাইক্রোসফটেরই জলবায়ু নীতি সম্পর্কিত সম্পৃক্ততা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।

করপোরেট আমেরিকার বেশকিছু প্রতিষ্ঠানই উচ্চাভিলাষী জলবায়ু প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে। যেমনঅ্যামাজন ২০৪০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘোষণা দিয়েছে তারা। অন্যদিতে ২০৩০ সাল নাগাদ পুরো সরবরাহ চেইনকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফেসবুক।

গত বছরই মাইক্রোসফট জানিয়েছিল যে তারা ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করে দেবে। পাশাপাশি ২০৫০ সাল নাগাদ নিজেদের নিঃসরণ করা সব কার্বন অপসারণ করবে। এছাড়া অ্যাপল জানিয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা তাদের গোটা সরবরাহ চেইনকে কার্বন নিরপেক্ষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

তবে যত ঘোষণা আর প্রতিশ্রুতিই থাক না কেন, প্রতিবেদনটি বলছে এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজকর্মে কোনো মিল নেই। ইনফ্লুয়েন্সম্যাপের নির্বাহী পরিচালক ডাইল্যান ট্যানার বলেন, বড় এসব প্রতিষ্ঠানই মূলত শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু নিজেদের সে সক্ষমতা তারা ব্যবহার করছে না। তারা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলোও যথেষ্ট নয় বলেও মনে করেন ট্যানার।

তবে চুপ করে নেই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে অ্যাপল বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাবিত ক্লিন এনার্জি স্ট্যান্ডার্ডকে সমর্থন দিয়েছে, যে প্রস্তাবে ২০৩৫ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

ইনফ্লুয়েন্সম্যাপের এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মাইক্রোসফট, অ্যাপল বা অ্যালফাবেট। অ্যামাজনের এক মুখপাত্র বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান স্থানীয়, রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বা শক্তির বিষয়ে নানাভাবে সক্রিয় রয়েছে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি পরিবহন খাতকে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করাসহ বিভিন্ন নীতি বাস্তবায়নেও তারা সক্রিয়া ভূমিকা রাখছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্য যখন যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তা তারা নেবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন