চীন-ভারতের দ্বিমতে বিভক্ত জি২০ জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা

বণিক বার্তা ডেস্ক

দুইটি নীতিতে একমত হতে পারেননি চীন-ভারতের জ্বালানি ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রীরা ছবি: রয়টার্স

জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় গৃহীত অঙ্গীকারে উল্লেখিত শর্তে একমত হতে ব্যর্থ হলেন জি২০-এর জ্বালানি পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রীরা। নিজেদের সর্বশেষ বৈঠকে চীন ভারতের মন্ত্রীদের অসহযোগিতার দরুন একমত হতে ব্যর্থ হন তারা। শর্তগুলোর দুটিতে বিপরীত মত প্রকাশ করেন উল্লিখিত মন্ত্রীরা।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, এসব দেশের মধ্যে একটি কয়লাবিদ্যুৎ থেকে বেরিয়ে আসার কাজ করছে। অধিকাংশ দেশই ব্যাপারে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে। তবে কিছু দেশ সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছে। অন্যরা ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী দশমিক থেকে ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বর্তমানে বিজ্ঞানীদের প্রাক-ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেজলাইনের তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণতার পরিমাণ গড়ে ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি দশমিক থেকে ডিগ্রি অতিক্রম করছে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।

ইতালির পরিবেশগত পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী রবার্তো সিঙ্গোলানি জানান, কিছু দেশ প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা দশকের মধ্যেই উষ্ণতার পরিমাণ দশমিক ডিগ্রির মধ্যে নামিয়ে আনতে চায়। তবে কার্বনভিত্তিক অর্থনীতির অন্য দেশগুলো প্যারিসে কী চুক্তি হয়েছে তাতেই আটকে আছে।

জি২০ সম্মেলনকে মূলত কপ২৬ নামে পরিচিত জাতিসংঘের জলবায়ু সংলাপ কেন্দ্র করে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছিল। আগামী নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

দুই দিনব্যাপী জি২০ সম্মেলনটিতে ইতালি সভাপতির দায়িত্ব পালন করায় দেশটির পরিবেশগত পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী রবার্তো সিঙ্গোলানি বৈঠকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জানান, চীন, রাশিয়া ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়াটা অনেক কঠিন বলে প্রমাণিত হয়েছে। এসব দেশ তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেকটাই স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ দিচ্ছে।

জি২০ জোটভুক্ত দেশগুলো বৈশ্বিক জিডিপির ৮০ শতাংশ ধারণ করে। পাশাপাশি এসব দেশের মোট জনসংখ্যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ। সিঙ্গোলানি জানান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান কানাডা দশকের আগেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এগিয়ে চলছে। তারা দশক পূর্ণ হওয়ার আগেই উষ্ণতা দশমিক ডিগ্রির নিচে নামিয়ে আনতে লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে।

তিনি জানান, এবারের সম্মেলনে কোনো নতুন অর্থনৈতিক চুক্তি হয়নি। তবে ইতালি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নিজেদের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক তহবিলে অর্থায়ন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।

চলতি মাসেই জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব উপলব্ধি করা গেছে। ইউরোপে ভয়াবহ বন্যা, যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ অগ্নিকাণ্ড সাইবেরিয়ায় তাপমাত্রা বেড়েছে। এত কিছুর মধ্যেও দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে ব্যয়বহুল জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রয়ে গেছে।

দুটি নীতি নিয়ে দেশগুলোর মতপার্থক্যের মধ্যেও প্রতিটি দেশই বাকি ৫৮টি নীতির ব্যাপারে একমত পোষণ করে। সিঙ্গোলানি জানান, প্রতিটি দেশই মনে করে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে ডি-কার্বোনাইজেশন একটি প্রয়োজনীয় লক্ষ্য। পাশাপাশি প্রতিটি দেশই প্যারিস জলবায়ু চুক্তির শর্তগুলোতে একমত পোষণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন