লন্ডনের ক্লাবগুলোর আতঙ্ক ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ।
এবার জার্মান জায়ান্টের রোষের আগুনে পুড়ল লন্ডনের খ্যাতনামা ক্লাব চেলসি।
ঘরের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে জার্মান দলটির কাছে গুনে গুনে তিন গোল হজম করেছে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের শিষ্যরা।
এত
বড়
হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলো থেকেই বিদায়ের পথে ব্লুজরা।
টিকে থাকতে হলে বায়ার্নের মাঠে বিপক্ষে চার গোলের ব্যবধানে জয়ের বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে গেল চেলসি।
প্রি-কোয়ার্টারের আরেক ম্যাচে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে জায়ান্ট বার্সেলোনার।
স্বাগতিক ন্যাপোলির বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে আন্তোয়াঁ গ্রিজম্যানের গোলে সমতায় থেকে ম্যাচ শেষ করেছে বার্সা।
বায়ার্নের লন্ডন লুট মিশন শুরু হয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লন্ডনের আরেক দল গতবারের রানার্সআপ টটেনহাম হটস্পার্সকে ৭-২ গোলে হারায় জার্মান জায়ান্টরা।
ওই
ম্যাচে সাবেক আর্সেনাল উইঙ্গার সের্জে নাবরি করেছিলেন চার গোল।
এবার চেলসি ট্র্যাজেডির অন্যতম কারণও ২৪ বছর বয়সী নাবরি।
তিন গোলের দুটোই করেন তিনি।
লন্ডনের ক্লাবগুলোর বিপক্ষে দুই ম্যাচে তার ছয় গোল।
বায়ার্নের লন্ডন বিজয়গাথা বলতে গেলে একটু পেছনে যেতেই হচ্ছে।
২০১৬-১৭ মৌসুমে স্বাগতিক আর্সেনালকে ৫-১ গোলে হারিয়েছিল জার্মান জায়ান্টরা।
মঙ্গলবার রাতে প্রথমার্ধে নিজেদের দুর্গ ভালোভাবেই সামলে রেখেছিল চেলসি।
গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে গিয়েছিল তারা।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ব্লুজদের রক্ষণদুর্গ।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে রবার্ট লেভানডভস্কির ক্রস থেকে লক্ষ্যভেদ করেন নাবরি।
এর
৩
মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নাবরি।
এবারো গোলের উৎস বায়ার্নের পোলিশ তারকা লেভানডভস্কি।
মাঠে নামবেন আর লেভা গোল পাবেন না, হালে এটা দেখতে পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার! ৭৬ মিনিটের সময় লন্ডন দর্শকদের আবারো হতাশায় পোড়ালেন বায়ার্নের এ পোলিশ গোলমেশিন।
বোঝার ওপর শাকের আঁটির মতো ম্যাচের শেষ দিকে লাল কার্ড পান চেলসির ডিফেন্ডার মার্কোস আলোনসো।
লন্ডন জয়ের পথে অনেকগুলো অর্জন নিজেদের করে নিয়েছে বায়ার্ন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসে তৃতীয় দল হিসেবে টানা সাত ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব দেখাল দলটি।
এর
আগে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছে বার্সেলোনা (২০০২-০৩) ও রিয়াল মাদ্রিদ (২০১৪-১৫)। বলা বাহুল্য, ওই দুবারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিততে পারেনি বার্সা ও রিয়াল।
তাই কঠিন বার্তাই থাকছে বায়ার্নের জন্য।
লন্ডনে দুই ম্যাচে ছয় গোল করলেও আর্সেনালে খেলার সময় ৯ ম্যাচে কোনো গোল পাননি নাবরি।
এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ১১ গোল করেছেন লেভা।
এর
মধ্য দিয়ে এক মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোল করা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করলেন এই পোলিশ তারকা।
২০১৩-১৪ মৌসুমে রিয়ালের জার্সিতে এ রেকর্ড গড়েছিলেন রোনালদো।
ম্যাচ শেষে এই হারকে নির্মম শিক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন চেলসি কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।
তার কথায়, ‘আমাদের
নির্মম শিক্ষাই দিয়েছে বায়ার্ন।
আমাদের কেমন ফুটবল খেলতে হবে সেটাও দেখিয়ে দিল তারা।’
অন্য ম্যাচে ন্যাপোলির রক্ষণদুর্গ ভাঙতে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে বার্সার।
রক্ষণদুর্গ আগলে কাউন্টার অ্যাটাক-নির্ভর খেলার কৌশল নেন ন্যাপোলি কোচ গাত্তুসো।
এই
কৌশলে লিওনেল মেসির দলকে প্রায় ধরাশায়ী করে ফেলেছিলেন খেলোয়াড়ি জীবনে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে বিশেষ খ্যাতি পাওয়া গাত্তুসো।
৩০
মিনিটের মাথায় ড্রিয়েস মের্টেনসের গোলে লিড নেয় ন্যাপোলি।
ম্যাচের ৫৭ মিনিটে গ্রিজম্যানের গোলে হার এড়ায় বার্সা।
ম্যাচ শেষে ন্যাপোলি কোচ গাত্তুসো বলেছেন, ‘আমরা
ভুল না করলে সারা রাত খেলেও গোল করতে পারত না বার্সা।’ বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স