পাঁচ বছরে জীবাশ্ম জ্বালানিতে ২৪ ব্যাংকের বিনিয়োগ ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার

বণিক বার্তা ডেস্ক

ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সংকট থেকে বাঁচতে পথ খুঁজছে বিশ্ব। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সভায়ও বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চলছে সতর্ক আলোচনা। তবে ডব্লিউইএফের সভায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে, এমন ২৪টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে কপটতার অভিযোগ তুলেছে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস।

সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকগুলো গত পাঁচ বছরে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পে বিনিয়োগ করেছে দশমিক ট্রিলিয়ন ( লাখ ৪০ হাজার কোটি) ডলার। কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পর থেকে হাউড্রোকার্বন খাতে বিনিয়োগ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণ হয়, বিশ্বের কিছু প্রধান ব্যাংক, বীমা পেনশন তহবিল যারা নিয়মিত দলবেঁধে দাভোসে যায়, তারা কয়লার মতো দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্পকে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে আসছে। গ্রিনপিস প্রতিবেদনের উপাত্ত সংগ্রহ করেছে আর্থিক খাত পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ব্যাংকট্রাক থেকে।

প্রাপ্ত উপাত্তে দেখা যায়, জীবাশ্ম জ্বালানি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ট্রিলিয়ন ( লাখ কোটি) ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে শীর্ষ ১০টি ব্যাংক। এগুলো হলো জেপি মরগান, সিটি, ব্যাংক অব আমেরিকা, আরবিসি রয়্যাল ব্যাংক, বার্কলেস, এমইউএফজি, টিডি ব্যাংক, স্কোসিয়াব্যাংক, মিজুহো মরগান স্ট্যানলি। এর মধ্যে ২০১৫ সালের পর থেকে বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিকে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান। যদিও বিষয়ে জেপি মরগান কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

তবে বার্কলেসের এক মুখপাত্র বলেন, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আমরা সচেতন। আমরা সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্যনিম্ন-কার্বনঅর্থনীতি প্রবর্তনে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে একই সঙ্গে আমরা বৈশ্বিক জ্বালানি চাহিদা পূরণের লক্ষ্য অর্জনেও বদ্ধপরিকর।

এদিকে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে তিনটি প্রধান পেনশন তহবিলের বিনিয়োগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গ্রিনপিস। এগুলো হলো অন্টারিও টিচার্স পেনশন প্ল্যান, কানাডা পেনশন প্ল্যান ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড এবং পেনশনডেনমার্ক। প্রধান প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিতে তহবিল তিনটির বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে অন্তত হাজার ৬০০ কোটি ডলারে।

গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক জেনিফার মরগান বলেন, ডব্লিউইএফের মিশন হলোবৈশ্বিক অবস্থার উন্নয়ন কিন্তু উল্লিখিত আর্থিক প্রতিষ্ঠাগুলো লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। যেসব  ব্যাংক, বীমা পেনশন তহবিল দাভোসে অংশ নিচ্ছে, জলবায়ু সংকটের প্রেক্ষাপটে সেগুলোর অবস্থান নিন্দনীয়। কারণ জলবায়ুগত অর্থনৈতিক ঝুঁকি থাকার পরও তারা জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তারা বিশ্বকে আরো একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

জেনিফার মরগানের মতে, দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সভায় অংশ নেয়া বিত্তশালীরা ভণ্ড বৈ অন্য কিছু নয়। কারণ মুখে পৃথিবী বাঁচানোর কথা বললেও, স্বল্পমেয়াদি মুনাফার লোভে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করে তারা পৃথিবীকে মেরে ফেলেছে। গার্ডিয়ান অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন