৭৩৭ ম্যাক্স দুর্ঘটনা

ডজনখানেক মামলা নিষ্পত্তি বোয়িংয়ের

বণিক বার্তা ডেস্ক

নিজেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দেড় শতাধিক মামলারকয়েক ডজননিষ্পত্তির কথা জানিয়েছেন মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বোয়িংয়ের মুখপাত্র পিটার পেদ্রাজা। গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় চলতি বছরের মার্চে ইথিওপিয়ায় কোম্পানিটির ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আরোহীদের সবাই নিহত হন। নিহত যাত্রীদের পরিবার বিভিন্ন আদালতে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এসব মামলা করেছে। খবর ফক্সবিজনেস।

এদিকে গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ারলায়ন এয়ার ম্যাক্সউড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুর্ঘটনায় আরোহীদের সবাই, তথা ১৮৯ জন নিহত হয়। দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়স্বজনদের করা ৪৬টি মামলা রয়েছে সিয়াটলের একটি ফার্মের কাছে। নিজেদের হাতে থাকা এসব মামলার চারটি নিষ্পত্তি হওয়ার কথা জানিয়েছে ফার্মটি। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার একই ঘটনায় অন্য নয়টি মামলার নিষ্পত্তি অনুমোদন দিয়েছেন শিকাগোর একটি ফেডারেল আদালত।

নিজেদের বিরুদ্ধে করা মামলার নিষ্পতি সম্পর্কে বোয়িংয়ের মুখপাত্র পেদ্রাজা বলেন, আমাদের কোম্পানিকয়েক ডজনমামলা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে। কোম্পানিটির কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও কী শর্তে তা করা হয়েছে, বোয়িংয়ের ইচ্ছানুসারে তা গোপন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।

এদিকে অল্প সময়ের ব্যবধানে ভয়াবহ দুটি দুর্ঘটনার পর বছরখানেক ধরে নিজেদের সফটওয়্যার সংস্কারের কাজ করে শিকাগোভিত্তিক বোয়িং। বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদনে অন্যান্য সমস্যাসহ প্রধানত ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের সফটওয়্যারের ক্রটির কারণে ওই দুই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সফটওয়্যার সংস্কারের পাশাপাশি কোম্পানিটি নিজেদের পাইলটদের জন্য প্রশিক্ষণের একটি নতুন কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নতুন কর্মসূচিটির অনুমোদন দেবে বলে আশা করছে বোয়িং। এটি কার্যকর হলে মার্কিন আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো আগামী বছরের শুরুর দিকে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী গ্রাউন্ডেড ৭৩৭ ম্যাক্সের উড়োজাহাজগুলো পুনর্ব্যবহারের অনুমতি পাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৭৩৭ ম্যাক্স সেবায় ফেরা নিয়ে বোয়িং কর্তৃপক্ষ আশাবাদী হলেও বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু বলেনি এফএএ। বোয়িংয়ের সংস্কারের অনুমোদন নিয়ে সময়সূচি প্রকাশ করেনি এফএএ। বরং এফএএর অ্যাডমিনিস্ট্রেটর স্টিফেন ডিকসন গত শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বোয়িংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে না পারা পর্যন্ত তা সেবায় ফিরতে পারছে না। তিনি বলেন, মডেলটি সহসা সেবায় ফেরাতে বোয়িং কর্তৃপক্ষের ওপর অনেক চাপ রয়েছে, তা আমি জানি। কিন্তু নিরাপত্তার দিকটি নিয়ে নিঃসংশয় না হয়ে আমরা তার অনুমোদন দিতে পারি না। আমরা চাই, আপনারা পর্যাপ্ত সময় নিন। নিরাপত্তা ইস্যুতে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন।

এদিকে ইন্দোনেশিয়ার দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের পরিবার বিভিন্ন আদালতে ৫০টির বেশি মামলা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় আদালতের রেকর্ডে। অন্যদিকে ইথিওপিয়ার দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ১০০টি মামলা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে একই রেকর্ডে।

মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে বোয়িংয়ের মুখপাত্র পিটার পেদ্রাজা বলেন, শর্তসাপেক্ষে কয়েক ডজন মামলা নিষ্পত্তি করতে পারায় আমরা সন্তুষ্ট। নিহতদের পরিবারকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেয়া নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বিবৃতিতে কর্মকর্তা বলেন, চলমান নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার প্রতি আমরা বেশ শ্রদ্ধাশীল।

এদিকে কয়েক ডজন মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা জানালেও কী পরিমাণ অর্থে তা হয়েছে, সেটা নিয়ে কিছু বলেনি কোম্পানিটি। তবে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা দিতে দুই মাস আগে গঠিত একটি আলাদা তহবিলে কোম্পানিটি এরই মধ্যে ৭০ লাখ ডলার ব্যয় করার কথা জানিয়েছেন পেদ্রাজা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন