বিলুপ্তির শঙ্কায় টিম বিজেএমসি!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে ২০১০ সালে ঘরোয়া শীর্ষ লিগে ফেরা বিজেএমসি এবার অবনমন ফাঁদ এড়াতে পারেনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হওয়া ক্লাবটি আবারো আছে হারিয়ে যাওয়ার হুমকিতে।

লিগের ২৪ ম্যাচের মাত্র দুটি জিতেছে বিজেএমসি, এবং ড্র পাঁচটি। ১১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের তলানিতে থেকে লিগ শেষ করেছে ক্লাবটি। আগামী মৌসুমে পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলার কথা দলটির। কিন্তু কর্মকর্তাদের কথার সারমর্ম যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে টিম বিজেএমসি নিয়ে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।

‘টিম বিজেএমসি কোন পথে হাঁটবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। সংস্থাটির নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন’—গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন বিজেএমসির অ্যাসিস্ট্যান্ট কন্টিনেন্টাল অফিসার (ক্রীড়া) আবদুল কুদ্দুস। তিনি যোগ করেন, ‘আমরা মনেপ্রাণে চাই টিম বিজেএমসি তার নিজের অবস্থান নিয়ে থাকুক। আবারো শীর্ষ লিগে ফিরে আসুক দলটি। কিন্তু বিষয়টি তো আমাদের হাতে নেই। শীর্ষ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’ স্বল্প সময়ের মধ্যেই টিম বিজেএমসির ভাগ্য নির্ধারণে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন আবদুল কুদ্দুস।

স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান আইডিসি নামে খেলত দলটি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত নাম ছিল বাংলাদেশ জেআইসি। পরবর্তীতে বিজেএমসি নাম ধারণ করে ক্লাবটি। একসময় ঢাকা লিগের পরাশক্তি ছিল এ দল। ১৯৬৭, ১৯৬৮, ১৯৭০, ১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালে শীর্ষ লিগের শিরোপাও জয় করে এ দল। ১৯৮১ সালে বিজেএমসির ফুটবল কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হয়। প্রায় ২৯ বছর পর ২০১০ সালে শীর্ষ লিগে ফিরে আসে টিম বিজেএমসি নামে।

শীর্ষ লিগে ফেরার পরের মৌসুমেই ফেডারেশন কাপ ফাইনাল খেলে দলটি। সে যাত্রায় অবশ্য শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে হেরে রানার্সআপ ট্রফিতে সান্ত্বনা খুঁজতে হয়েছে। পরবর্তীতে প্রিমিয়ার লিগের মাঝারি দল হিসেবে খেলে আসছিল টিম বিজেএমসি। চলতি মৌসুমের আগে দল গড়া নিয়েই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তা পেছনে ফেলে দল গড়া হয়েছে বটে, নানা জটিলতার কারণে মাঠে পুরনো সেই বিজেএমসিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শীর্ষ লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার মাধ্যমে তার মাশুলও দিতে হয়েছে।

‘মৌসুমের শুরুতে বিজেএমসির দল গড়া নিয়েই অনিশ্চয়তা ছিল। জয় ভাই (সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়) পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং বিজেএমসির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে অনিশ্চয়তা দূর করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা ফুটবল দলের বিষয়ে খুব আগ্রহী নন। ফুটবলের শীর্ষ দল হিসেবে টিকে থাকা কঠিন’—বলছিলেন টিম বিজেএমসির কর্মকর্তা অমিত খান শুভ্র।

বিজেএমসি নারী দল নিয়েও অনেক দিন ধরে অনিশ্চয়তা। নারীদের ঘরোয়া আয়োজন না থাকায় ফুটবলাররা বসে বসে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। ঘরোয়া কার্যক্রম শুরু না হলে নারীরাও চাকরি হারাতে পারেন। নারী ফুটবলাররা বছরজুড়ে আন্তর্জাতিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকলেও ঘরোয়া কার্যক্রম শুরু করার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সাবিনা খাতুনসহ ২১ নারী ফুটবলার রয়েছেন বিজেএমসি দলে, যার ১১ জন নিকট অতীতে জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন