ঈদুল
আজহার বাকি মাত্র একদিন। শেষ সময়ে যশোর, সিলেট ও লক্ষ্মীপুরে ক্রেতার
আনাগোনা বেড়েছে। এসব জেলার হাটগুলোয় পশু সরবরাহও বেড়েছে। তবে চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের
গুরুর। কারণ হিসেবে ক্রেতারা বলছেন, বড় গরুর দাম
বেশি। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় পশু পালনে এ বছর খরচ
বেড়েছে। এজন্য দামটাও বেশি বলে জানিয়েছেন খামারি ও ব্যাপারীরা।
যশোরের বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, জেলায় ২১টি পশুর হাট বসেছে। তবে এবারো দেশী ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, ‘এ বছর পশুর সংকট নেই। চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত আছে ৩০ হাজার ১৩৩টি। চাইলে অন্য জেলাও কোরবানির পশু পাঠানো যাবে। জেলার আটটি উপজেলায় ২১টি হাট বসেছে। এর মধ্যে বৃহত্তর পশুর হাট বসেছে শার্শা উপজেলার সাতমাইলে।’
গতকাল সাতমাইল পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে কোরবানির পশু। গরু ছাড়াও এ হাটে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বিক্রি করতে এসেছেন অনেকে। এগুলোর দাম জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘দেশী গরুর দাম মানভেদে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।’
শহরের বেজপাড়ার জামিলুর রহমান নামে এক ক্রেতা জানান, গত বছর যে গরুর দাম ৭০-৮০ হাজার টাকা ছিল, এ বছর সে গরু ১ লাখের ওপরে দাম হাঁকছেন। এভাবে গরুর আকার অনুযায়ী দামেও তফাৎ রয়েছে।’
লক্ষ্মীপুরের পশুর হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পশুর দাম তুলনামূলক বেশি হাঁকানো হচ্ছে। তবে ব্যাপারীরা বলছেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খরচও বেড়েছে, তাই দামও একটু বেশি। তবে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পশু রয়েছে। শেষ সময়ে দাম ক্রেতার নাগালেই চলে আসবে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
আবুল কাশেম নামে এক ক্রেতা জানান, হাটে প্রচুর পশু উঠেছে। কিন্তু ব্যাপারীরা যে দাম চাচ্ছে, তাতে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। তবে বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর দাম বেশি।
তাজুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা জানান, গত বছর যে গরু ৮০-৯০ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে, এবার সে গরু ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাচ্ছে।
একই দিন কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন থেকে একটি দেশী গরু ক্রয় করেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহীদ স্মৃতি একাডেমির শিক্ষক মো. হাসান। তিনি জানান, গরুর দাম একটু বেশি। তবে শহরের তুলনায় চরাঞ্চলের দিকে দামদর করে কিছুটা কমের মধ্যে পেয়েছেন তিনি। ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি দেশী জাতের গরু কিনেছেন।
সিলেটের বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বড় গরুর দাম আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা, মাঝারি গরুর দাম ১ থেকে দেড় লাখ টাকা, ছোট গরুর দাম ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। প্রধান হাট কাজিরবাজার ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের হাটগুলোয় একই দাম হাঁকা হচ্ছে। তবে কিছুটা সাধ্যের মধ্যে থাকায় ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর দিকে নজর বেশি ক্রেতার।
নগরীর কুমারগাঁও তেমুখী এলাকায় অস্থায়ী পশুর হাটে কথা হয় নগরীর নোয়া খুররমখলার বাসিন্দা রফিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গতবারের তুলনায় একেকটি গরুর দাম ২০-৩০ হাজার টাকা বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা। গত বছর যে গরু ৬০ হাজার টাকায় কেনা গিয়েছিল, সেসব গরু বিক্রি ৮০-৯০ হাজার টাকা দাম হাঁকছেন।’
সিলেট শহরতলির শিবেরবাজার স্থায়ী পশুর হাটে তিন গরু নিয়ে এসেছেন কৃষক আব্দুল বারী। তিনি বলেন, ‘গরুগুলো তার লালনপালন করা। দুদিন আগে বাজারে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি।’