ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি) চট্টগ্রামের
মিরসরাইয়ে প্রতি বছর কমছে ভুট্টার আবাদ ও উৎপাদন। ২০২০
সালে উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে
ভুট্টা আবাদ হলেও ২০২৪ সালে তা নেমে এসেছে
৪৬ হেক্টরে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে উৎপাদন কমেছে ২৪০ টন। চাষীদের অভিযোগ, ভুট্টা চাষে কৃষি অফিসের সহযোগিতা পান না তারা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ হেক্টর। কিন্তু ২০২১ সালে হঠাৎ ঘটে ছন্দপতন, কমে যায় আবাদ। ওই বছর ২০ হেক্টর কমে আবাদ হয় ৫০ হেক্টরে। উৎপাদন হয় ৫১০ টন ভুট্টা। ২০২২ সালে আরো ২০ হেক্টর কমে আবাদ হয় ৩০ হেক্টরে। উৎপাদন হয় ৩০০ টন ভুট্টা। ২০২৩ সালে ৬ হেক্টর বেড়ে আবাদ দাঁড়ায় ৩৬ হেক্টরে। চলতি বছর আরো ১০ হেক্টর বেড়ে আবাদ হয় ৪৬ হেক্টর।
জানা গেছে, উপজেলায় একাধিক পোলট্রি ফিড হ্যাচারি রয়েছে। এসব হ্যাচারিতে ফিড উৎপাদনের জন্য প্রতি বছর ৫০০ টনেরও বেশি ভুট্টা স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহের পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। তাই অনেক পোলট্রি ফিড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কৃষকদের চাষের খরচ দিয়ে ভুট্টা আবাদে আগ্রহী করে তুলছে। অনেক গরু খামারি পশুর খাদ্যের জন্য ভুট্টা ব্যবহার করছে।
কৃষি অধিদপ্তর জানায়, মিরসরাইয়ে রকেট-৫৫, সুপার সাইন, কহিনূর পাইওনিয়ার, টাইগার-৫৫ সহ বেশকিছু জাতের ভুট্টা চাষ হয়। এছাড়া হাইব্রিড কেএমএসবি-৪১০ ও বিডব্লিউএমআরআই হাইব্রিড-২ জাতের ভুট্টা বেশি চাষ হয়।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিমজোয়ার গ্রামের ভুট্টাচাষী শেখ মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি গরুর খাবারের জন্য উত্তরবঙ্গ থেকে ভুট্টা কিনি। কিন্তু চলতি বছর সাড়ে সাত একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এতে উৎপাদন হতে পারে ৮১ টন। সম্প্রতি পোকার আক্রমণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভুট্টা খেত। তবে কৃষি অফিসের কোনো সহযোগিতা পাইনি। এমনকি কোনো কৃষি কর্মকর্তা আমার খেতটি দেখতেও আসেননি।’
ভুট্টা চাষে প্রণোদনা দেয়ার পরও কেন উৎপাদন বাড়ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভুট্টা চাষে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। কেন কৃষকরা ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন না, তা বুঝতে পারছি না। তবে আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন।’
