অর্থবছর ২০২৪

ভারতের প্রযুক্তি খাতে ২৫৪ বিলিয়ন ডলার আয়ের সম্ভাবনা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এখনো চলমান। এর কারণে সৃষ্ট প্রতিকূলতা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে ভারতের প্রযুক্তি খাত ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। ফলে প্রযুক্তিখাতে দেশটির রাজস্ব আয় দাঁড়াবে ২৫ হাজার ৪০০ কোটি (২৫৪ বিলিয়ন) ডলার। ডেলয়েট ইন্ডিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে। ডেলয়েট নিরীক্ষা, পরামর্শ, আর্থিক ঝুঁকি, করসহ বিভিন্ন আইনি পরিষেবা দিয়ে থাকে।

ডেলয়েট ইন্ডিয়া টেক ট্রেন্ডস ২০২৪ প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরে ভারতের প্রযুক্তি রফতানি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ২০ হাজার কোটি ডলারের পৌঁছবে। এ প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে দেশটিতে থাকা গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টারগুলোর (জিসিসি) দ্রুত বর্ধনশীল উপস্থিতি। মূলত জিসিসি হলো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত অফশোর ইউনিট বা অপারেশনাল হাব, যা বিভিন্ন কৌশলগত কার্য সম্পাদন করে থাকে। 

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের জিসিসি বাজার ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এরই সঙ্গে দেশটিতে জিসিসির সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ উন্নীত হবে, যা প্রায় ৪৫ লাখেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। বর্তমানে ভারতে ১ হাজার ৬০০টিরও বেশি জিসিসি রয়েছে। 

ভারতে জিসিসি বাজার সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব তৈরি করছে। ২০২৪ সালে দেশটির গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টারগুলো বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে প্রযুক্তি পরিষেবা সরবরাহ করে আরো উন্নত অবস্থান তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ডেলয়েটের পূর্বাভাস, ভারত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আগামীতে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে স্পাশিয়াল কম্পিউটিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেটাভার্স, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং জেনারেটিভ এআই। আধুনিকীকরণ, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণার ওপর ভারতের দৃঢ় মনোনিবেশ খাতটিকে এগিয়ে নিচ্ছে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বৈশ্বিক প্রযুক্তি কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ভারত ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণার ওপরও জোর দিয়েছে। এছাড়া দেশটিতে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে মেটাভার্স, এআই, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং সুপার কম্পিউটিংয়ের মতো অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়ছে। 

ভারতের সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রযুক্তি খাতের অবদান ৮ শতাংশ। পরবর্তী দশকে প্রযুক্তি খাতের ব্যয় বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান আরো বাড়বে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ইকোসিস্টেম, শিল্পগুলোর ক্লাউডভিত্তিক সেবা গ্রহণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা খাতের ফলে এ অবদান বাড়বে।

তবে ভারতের বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জেনএআই ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ডেলয়েট প্রতিবেদনে সতর্কবার্তা দিয়েছে। সেখানে এআইয়ের ব্যবহার বিষয়ক ঝুঁকি প্রশমনের ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ জেনএআইয়ের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে।

ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রোগ্রামের আওতাধীন ভারত সরকার মেঘরাজ ক্লাউড পরিষেবা এবং ইন্ডিয়াএআই প্রকল্পের মতো উদ্যোগগুলো সক্রিয়ভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে অবদান রাখছে। এছাড়া পাবলিক-প্রাইভেট এআই ইনোভেশন পার্টনারশিপের জন্য একটি তহবিল গঠনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন