ক্যাম্পাসে ভ্লগিং

রিভিউয়ার থেকে ফুড ভ্লগার

নাজমুল হাসান

সাজ্জাদুল ইসলাম ছবি: ফেসবুক

খাবার নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। কোনো শহরে গেলে সেখানকার বিখ্যাত খাবার পরখ করে দেখার আগ্রহ সবারই থাকে। বর্তমানে ফুড ভ্লগারদের ভিডিওগুলো জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। খাবারদাবার নিয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলামের আগ্রহ বেশ পুরনো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ফুড রিভিউ লিখতেন তিনি। মানুষকে ভালো খাবারের সন্ধান দিতে এসব করতেন। তাই ভ্লগিংয়ের কথা মাথায় এলে সাতপাঁচ না ভেবে ফুড ভ্লগিংকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। 

করোনা অতিমারী চলাকালীন ফুড ভ্লগিং শুরু করেছিলেন। তখন অলস সময়কে কাজে লাগানোর জন্য বিভিন্নজন বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েন। তার মধ্যে ফেসবুক বা ইউটিউব ভিডিও বানানো আগ্রহের শীর্ষে ছিল। তবে দেখতে একই রকম হলেও অন্যান্য ফুড ভ্লগারের থেকে সাজ্জাদের গল্পটা একটু ভিন্ন।

শুরু থেকেই তার মুখে জড়তা ছিল। যাকে আমরা তোতলামো বলি। এ ধরনের মানুষ সাধারণত বন্ধু মহলে বুলিংয়ের শিকার হয়। সাজ্জাদও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। তাই ছোটবেলা থেকেই বেশি বেশি কথা বলার চেষ্টা ছিল তার। বন্ধু মহলে বাচাল নামে পরিচিত হওয়ার পরও সাজ্জাদ দমে যাননি। একটা সময় সফল হয়েছেন। কিন্তু করোনাকালীন ঘরে বন্ধ থেকে আবারো তার মাঝে তোতলামো বাসা বাঁধে। এ তোতলামো থেকে বাঁচতে তিনি শুরু করেন নতুন সংগ্রাম।

ফুড ভ্লগিংয়ের মাধ্যমে তিনি প্রচুর কথা বলতে পারতেন। ভ্লগিং করতে করতে একটা সময় তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। তার চ্যানেলের নাম Khaite Chai। হাজার ৩০-এর মতো ফলোয়ার তার। ব্যুফের নামে চট্টগ্রামের একটি রেস্টুরেন্টের প্রতারণা নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি ভ্লগ প্রকাশ করেন চুয়েটের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম। যে ভিডিও দেশের ৬০ লক্ষাধিক মানুষ দেখে। সাড়ে তিন হাজার মানুষ শেয়ার করে। ভাইরাল হওয়া সে ভিডিওর রেশে একসময় রেস্টুরেন্টটি বন্ধ হয়ে যায়।

সাজ্জাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে স্ট্রিট ফুড। রাস্তায় বের হলে চেষ্টা করেন নতুন নতুন খাবার খাওয়ার আর সে খাবারগুলোর মান তুলে ধরার। ভবিষ্যতে ভারতের বিখ্যাত স্ট্রিট ফুডগুলো নিয়ে ভ্লগ করার ইচ্ছা আছে তার।

সাজ্জাদের ভ্লগের একটি বড় অংশে তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেন মানুষের গল্প। রাস্তার পাশের খাবার বিক্রেতাদের জীবন তার প্রধান উপজীব্য বিষয়। ভিডিওগুলোয় শুরুর দিকে আশানুরূপ সাড়া পাননি সাজ্জাদ। তবে কালের পরিক্রমায় এখন ভালোই সাড়া পাচ্ছেন তিনি। উচ্চশিক্ষায় বিদেশ যাত্রার ইচ্ছা তার। একজন আন্তর্জাতিক মানের ফুড ভ্লগার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সাজ্জাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে ইংরেজি ভাষায় ফুড ভ্লগিং।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন