... যা কিছু মন ভরিয়েছে

শর্মিলা সিনড্রেলা

প্রতিনিয়ত নিরীক্ষা সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে শিল্পের প্রতিটি ধারা সমৃদ্ধ হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পীর দর্শনের বৈচিত্র্যময় উপস্থাপন শৈলীতে বাংলাদেশের শিল্পচর্চাও প্রতিনিয়ত পর্যায়ক্রমে সমৃদ্ধ হয়েছে। এবারের ১৯তম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০২২ আয়োজনটিও তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এশিয়ার বৃহৎ উৎসবে রয়েছে নানামুখী শিল্পকলার উপস্থাপন, যা অংশগ্রহণকারীদের মন ভরিয়ে চোখকে শান্তি দেয়।

শিল্পীদের জন্য গ্র্যান্ড পুরস্কার: প্রতিবারের মতো এবারের উৎসবে রয়েছে গ্র্যান্ড সম্মানসূচক পুরস্কার। এবারে তিনজন শিল্পী গ্র্যান্ড পুরস্কার পেয়েছেন; বাংলাদেশের সুশান্ত কুমার অধিকারী ইয়াসমিন জাহান নূপুর এবং নেদারল্যান্ডসের শিল্পী হ্যারল্ড স্কোলে। এছাড়া সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের শিল্পী ফারিহা জেবা, জয়তু চাকমা, মামুর আহসান মাহতাব, ময়নুল ইসলাম পল, সুমন চন্দ্র দাস পর্তুগালের এনা সিলভিয়া মালহাডো।

পারফরম্যান্স আর্ট: শিল্পী তার দেহ নানা অনুষঙ্গকে নান্দনিকভাবে ব্যবহার করে নিজেকে উপস্থাপন করেন। দৈহিক সীমাবদ্ধতাকে মানসিক চিন্তার বিশ্লেষণ দ্বারাই আরাধ্য কাজটি করেন। যেকোনো স্থান, সময়কে ব্যবহার করে দর্শকদের মনোজগৎ নাড়িয়ে দেন। বহু+মাত্রিক পারফরম্যান্স আর্ট একাডেমির বিভিন্ন গ্যালারি, উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে সমান্তরালভাবে একাডেমির বাইরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে উপস্থাপন প্রদর্শন করা হচ্ছে। মাসব্যাপী আয়োজনে মোট ৫১ জন পারফরম্যান্স আর্টিস্ট তাদের কাজ উপস্থাপন করছেন। তার মধ্যে ৩৬ জন শিল্পী একক পারফর্ম করছেন এবং বাংলাদেশ পারফরম্যান্স আর্ট গ্রুপের ১৫ জনের সমবেত একটি গ্রুপ পারফরম্যান্সও দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও চিলি, কঙ্গো, নেদারল্যান্ডস, কোরিয়া, মেক্সিকো, জাপানের শিল্পীরাও তাদের শিল্পকলা প্রদর্শন করছেন উৎসবে।

লঞ্চে আর্টক্যাম্প: আর্টক্যাম্পেও অংশগ্রহণ করেছেন দেশী-বিদেশী দেড় শতাধিক শিল্পী। ১১ ডিসেম্বর পদ্মা নদীতে লঞ্চের ছাদে শিল্পীদের নিয়ে আর্টক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ বাংলাদেশী ১০০ বিদেশী শিল্পীর অংশগ্রহণে দিনব্যাপী আর্টক্যাম্প নৌবিহারের শেষে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

হোম অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট সেমিনার: ১০ ডিসেম্বর লেখক অধ্যাপক নাজমা খান মজলিশের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ১৯তম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর হোম অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট বিষয়ক সেমিনার শুরু হয়। দেশী-বিদেশী শিল্পী-শিল্পসমালোচক, জুরি, পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণে একটি নির্দিষ্ট থিমে হওয়া সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী মোস্তফা জামান। তাছাড়া বিভিন্ন পর্বে আলোচনা করেন স্থপতি সাইফ উল হক, লেখক . আজহার আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সমসদ মর্তুজা, লেখক শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। বাউল গানের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুদিনের সেমিনার। এছাড়া মাসব্যাপী আয়োজনের তালিকায় রয়েছে শিশু কর্নার, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ছোট-বড় আরো নানা কিছু। ১১৪টি দেশের অংশগ্রহণে ডিসেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনী চলবে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন