উৎসবে আয়োজনে শিল্পাচার্য ও পটুয়াকে স্মরণ

শর্মিলা সিনড্রেলা

১৯৯৮ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন স্মরণে জয়নুল উৎসব হয়েছিল একবার। পরে তা আর নিয়মিত হয়নি। তাই জানা যায় না এরপর ঠিক কতবার আয়োজন করা হয়েছিল উৎসবের। উদ্যোগটা আবার ফিরে আসে ২০০৯ সালে। তখন থেকে প্রতিবার নিয়মিত হয় জয়নুল উৎসব। বর্তমানে এটি করা হয় এক ধরনের কাঠামোয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত জয়নুল উৎসব ঘিরে থাকে নানা আয়োজন।

জয়নুল উৎসব আয়োজনে অনুষদের আটটি বিভাগেরই স্টল থাকে। সেখানে প্রদর্শন করা হয় আট বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিল্পকর্ম। চাইলে সেখান থেকে পছন্দমতো শিল্পকর্ম সংগ্রহও করতে পারেন শিল্পপ্রেমীরা। পাশাপাশি থাকে লোকশিল্পীদের স্টল। বিভিন্ন জায়গা থেকে শখের হাঁড়ি, শীতলপাটি, সরা, পুতুল বানাতে সিদ্ধহস্ত লোকশিল্পীরা আসেন, তুলে ধরেন নিজেদের শিল্পচর্চার নিদর্শন। লোকশিল্পী শিক্ষার্থীদের পদচারণে জমজমাট হয়ে ওঠে জয়নুল উৎসবের প্রাঙ্গণ।

এবারো আয়োজনের সেই কাঠামোর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন চিত্রায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমন ওয়াহিদ বলেন, উৎসবের অংশ হিসেবে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিল্পশিক্ষায় সম্পৃক্ত ছিলেন বা শিল্পশিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে এমন একজন অথবা দুজনকে দেয়া হয় জয়নুল সম্মাননা। একই সঙ্গে বাংলাদেশের শিল্পশিক্ষার উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছেন বা আমাদের যেসব শিক্ষার্থী বাইরে পড়তে গিয়েছেন তাদের শিক্ষক ছিলেন বা আমাদের প্রতিষ্ঠানের উন্নতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন এমন বিদেশী শিক্ষক-শিল্পীদেরও সম্মান করা হয়। এছাড়া থাকছে জয়নুল স্মারক বক্তৃতা। এবার বক্তৃতা করার কথা রয়েছে শান্তিনিকেতনের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক আর. শিব কুমারের। বিশিষ্ট শিক্ষককে জয়নুল সম্মাননাও দেয়া হবে।

১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জয়নুল আবেদিন। সেদিন শুরু হওয়া জয়নুল উৎসব চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত। একইভাবে ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করা কামরুল হাসানকে সম্মান জানাতে তার জন্মদিবসে আয়োজন করা হয় কামরুল উৎসবের।

তবে কামরুল উৎসব অনেক বছর ধরে চলে আসা কোনো ট্রেন্ড নয়। মাত্র দুই বছর থেকে আয়োজন করা হচ্ছে। চারুকলার গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ছিলেন তিনি। জয়নুল উৎসবের মতো করেই কামরুল উৎসবের আয়োজন করছে গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ।

ডিসেম্বর পটুয়ার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে গ্রাফিক ডিজাইনের বার্ষিক প্রদর্শনী উন্মুক্ত করা হয়। গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক . ফারজানা আহমেদ বলেন, উনি আমাদের লোকসংস্কৃতির স্রষ্টা। তাই দিনটিকে কেন্দ্র করে আমাদের বেশকিছু ফোক আয়োজন থাকে। এবারো তার ব্যতিক্রম ছিল না। ফোক গানগুলোর যেমন আয়োজন করা হয়, তেমনি পিঠাপুলির আয়োজনও থাকে।

কামরুল উৎসব একদিন হলেও উপলক্ষে জয়নুল গ্যালারিতে হওয়া প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল চারদিন। ফারজানা আহমেদ বলেন, সত্যি বলতে এবার খুব বড় আয়োজন আমরা করতে পারিনি। স্যারের নামে একটা ল্যাব উদ্বোধন করা হয়েছে গত বছর। কামরুল হাসানের মেয়ে সুমনা হাসান উৎসবের ফান্ডিং করেন। আমাদের বিভাগের তেমন ফান্ড নেই। যদি আমরা বড় আকারের ফান্ড পাই তাহলে বৃহৎ পরিসরে উৎসব করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন