টিকিটের কালোবাজারি

ব্রিটিশ সংগীতপ্রেমীদের ১৪ কোটি পাউন্ড বাড়তি খরচ

বণিক বার্তা ডেস্ক

লন্ডনে টেইলর সুইফটের কনসার্টের প্রচারণা ছবি: রয়টার্স

চাহিদাসম্পন্ন কনসার্টের টিকিট নির্ধারিত মূল্যে কিনে কালোবাজারে চড়া অংকে বিক্রি নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে এ বাবদ যুক্তরাজ্যের সংগীতপ্রেমীদের সম্মিলিত বাড়তি খরচ চোখ কপালে তোলার মতো। ব্রিটিশ সংগীত খাতের কোম্পানি ওটুর গবেষণা অনুসারে, দেশটিতে টিকিট হাতবদলের কারণে বছরে ১৪ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড অতিরিক্ত লেনদেন হচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।  

টিকিট হাতবদলে জড়িতরা অনলাইনে টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় বট বা প্রোগ্রাম ব্যবহার করে দ্রুত বুক করে ফেলে। এরপর তা গ্রাহকদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে। 

কনসার্টের আয়োজক হিসেবে ওটু যুক্তরাজ্যে পরিচিত ব্র্যান্ড। কোম্পানিটি প্রতি বছর প্রায় ১৪ লাখ কনসার্টের টিকিট বিক্রি করে থাকে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ছয় সপ্তাহে তাদের ৫০ হাজারেরও বেশি বট প্রতিহত করতে হয়েছে। 

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ পরিচালিত জরিপের মাধ্যমে টিকিট হাতবদলের সঙ্গে জড়িত পেশাদার ব্যক্তি ও প্লাটফর্মগুলো কীভাবে প্রচলিত ব্যবস্থার অপব্যবহার করছে তা জানা যায়। এরপর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে ওটু। গত মাসে ওয়েসিস রিইউনিয়ন ট্যুরের টিকিটের দাম অনেক বেড়ে যায়। কেন এমনটা হলো, তা খতিয়ে দেখছে সরকারি সংস্থা। মুনাফার জন্য টিকিট পুনরায় বিক্রি অবৈধ ঘোষণা করা যায় কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। 

এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সম্মেলনে সংস্কৃতিমন্ত্রী লিসা নন্দী বলেন, ‘আমরা টিকিট হাতবদলের মাধ্যমে সুবিধা নেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, কারণ সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগে সবার সমান অধিকার রয়েছে।’ 

ইউগভের জরিপে প্রায় অর্ধেক অংশগ্রহণকারী অফিশিয়াল নাকি তৃতীয়পক্ষের বিক্রেতার কাছ থেকে কনসার্টের টিকিট কেটেছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। যুক্তরাজ্যে পাঁচটি টিকিটের মধ্যে একটি এমন ওয়েবসাইট থেকে কেনা হয়ে থাকে, যেখান থেকে টিকিট কালোবাজারি হয়ে থাকে। 

ওটুর বিশ্লেষণ অনুসারে, টিকিট হাতবদলের মাধ্যমে সম্পর্কিত ব্যক্তিরা প্রতি বছর প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড মুনাফা করছে। অর্থাৎ এ পরিমাণ অর্থ টিকিট ক্রেতাদের বেশি দিতে হচ্ছে।

কনসার্টের টিকিট কালোবাজারির সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া বেশ কঠিন। তবে ইউকে মিউজিক ও ইউগভের জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে হাতবদল থেকে মুনাফার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ফ্যানফেয়ার অ্যালায়েন্স শিরোনামে ক্যাম্পেইন গ্রুপও টিকিট হাতবদল থেকে মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রে কঠোর আইনের দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি, টিকিট বিক্রির সময় অবশ্যই ক্রেতাকে আরো তথ্য দিতে হবে। পাশাপাশি এক্ষেত্রে সম্ভাব্য কোনো ঝুঁকি রয়েছে কিনা তাও জানাতে হবে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব প্লাটফর্ম পেশাদারভাবে বছরে অন্তত ১০০ টিকিট পুনরায় বিক্রি করে থাকে তাদের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্লাটফর্মগুলোয় তথ্য অসম্পূর্ণ থাকে, নয়তো পাওয়া যায় না।  

ওটুর অংশীদার ও স্পন্সরশিপ বিষয়ক পরিচালক গ্যারেথ গ্রিফিথস বলেন, ‘আমরা পেশাদার টিকিট হাতবদলকারীদের বাজারের অপব্যবহার করে সংগীতপ্রেমীদের কাছে বেশি দামে বিক্রির বিষয়ে ক্লান্ত। যে দাম নির্ধারণ করা হয় সে দামেই টিকিট পাওয়ার অধিকার রয়েছে ক্রেতাদের। কিন্তু খুব কম সময়ই তা হয়ে থাকে।’ 

ওটু সার্চ ইঞ্জিন সংশ্লিষ্টদেরও এ বিষয়ে সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে। টিকিট বিষয়ে সঠিকভাবে তথ্য প্রদর্শন করে না এমন প্লাটফর্মগুলো অনেক সময় সার্চ ইঞ্জিন ফলাফলে ওপরের দিকে থাকে। এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে কোম্পানিটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন