ঊর্ধ্বমুখিতা কাটিয়ে খাতুনগঞ্জে কমছে মসলাপণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে মসলার দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-১০০ টাকা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশের বাজারে চাহিদা কমার পাশাপাশি মসলাপণ্য সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। এ কারণে ঊর্ধ্বমুখিতা কাটিয়ে কমতে শুরু করেছে মসলাপণ্যের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে আমদানীকৃত ও দেশী মসলার দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-১০০ টাকা।

এর আগে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ লেনদেনে স্থবিরতা, আমদানিতে অচলাবস্থাসহ নানামুখী সংকটে মসলার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। প্রচলিত ৯০ শতাংশ মসলাই আমদানিনির্ভর হওয়ায় দামে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা দেয়। তবে দুই সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে কমছে মসলার দাম। আমদানি প্রক্রিয়া সহজীকরণের পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ লেনদেনের সংকট কিছুটা কমে আসায় বাজারও স্থিতিশীল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মসলাপণ্যের বাজার নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ও ভোক্তা পর্যায়ে জনপ্রিয় পঞ্চগড়ের কাচা মরিচ বর্তমানে বেচাকেনা হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬৫ টাকায়। এছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও হাটহাজারী অঞ্চলের কম ঝালযুক্ত প্রতি কেজি মরিচের দাম ২০-২৫ টাকা কমে ৩৪০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। 

ভারতীয় ঝাল মরিচ বেচাকেনা হয়েছে ৩২০-৩৩০ টাকায়। বর্তমানে ভারতীয় কম ঝালযুক্ত মরিচের দাম কেজিপ্রতি ২৮০-২৮৫ টাকা। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি হওয়ায় প্রতি কেজি হলুদ (আস্ত) বেচাকেনা হচ্ছে  ২৩৮-২৪২ টাকায়। দেশী আস্ত হলুদ কেজিপ্রতি ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানগুলো আরো জানায়, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি জিরার দাম অন্তত ৫০ টাকা কমেছে। বর্তমানে মসলাপণ্যটি বেচাকেনা হচ্ছে ৬২০-৬২৫ টাকায়। এলাচের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা। প্রতি কেজির মূল্য নেমেছে ২ হাজার ৯৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। লবঙ্গর দাম কেজিপ্রতি ১২০ টাকা কমে ১ হাজার ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

খাতুনগঞ্জে গোলমরিচের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। বর্তমানে মসলাপণ্যটি প্রতি কেজি ৯৫০-৯৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি জয়ত্রীর দাম ৮০-১০০ টাকা কমে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকায় নেমেছে। অন্যদিকে জায়ফল কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা কমে ৬৫০ টাকায় ও ধনিয়া কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা কমে ১৫০-১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

আমদানীকৃত কালোজিরার দাম ১০-১৫ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৩৫৫-৩৬০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। দেশী কালোজিরার দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৩৪০-৩৫০ টাকায় নেমেছে। সরিষার দাম কমেছে কেজিতে ৭২-৭৫ টাকা। প্রতি কেজি মেথির দাম ১৫-২০ টাকা কমে ১১৫ টাকা ও তেজপাতার দাম ৪০-৪৫ টাকা কমে পাইকারি বাজারে ৮৫ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। 

খাতুনগঞ্জের মসলা ও ডালজাতীয় পণ্যের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেকান্দর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বর্তমানে ঋণপত্র খোলার মার্জিনের ওপর বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়াসহ বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগের ফলে সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক হওয়ার পথে। এ কারণে প্রায় সব ধরনের আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আমদানি মসলাপণ্যের দাম নিম্নমুখী হওয়ার প্রভাব পড়ছে দেশী মসলার বাজারে।’

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বন্দর-কাস্টমসসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে দ্রুত পণ্য খালাসসহ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে। চাহিদা স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি মজুদপ্রবণতা কমে আসায় বাজারে দাম কমছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন