ঢাবিতে যুবক ও জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

বিচার দাবিতে বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে এক যুবক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিচারবহির্ভূত এ দুই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ। বিশ্ববিদ্যালয় দুটির শিক্ষার্থীরাও গতকাল দিনভর বিক্ষোভ মিছিল করেন। জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। 

ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে বুধবার রাতে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। জাবিতে শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার মোল্লাবাড়ীর ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

তোফাজ্জলের নির্মম মৃত্যুর কথা ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবিতে গতকাল ‘গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে গতকাল বেলা সাড়ে ৩টায় মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সমাবেশ করেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ঘটনা দীর্ঘ সময় ধরে সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। অবশ্যই এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যারাই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের অতিদ্রুত আটক করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।’

জানা যায়, তোফাজ্জল নামের ওই যুবক বুধবার রাত ৮টার দিকে বঙ্গবাজার এলাকার পার্শ্ববর্তী ফজলুল হক মুসলিম হলের ফটক দিয়ে হল মাঠে প্রবেশ করেন। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে অতিথি কক্ষে নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মারধর করা হয়। পরে ওই যুবককে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্টাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে অচেতন হয়ে পড়েন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জল। রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় ঘটনাটি অবহিত করলে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

তোফাজ্জলকে হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় গতকাল মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিবির একাধিক টিমও কাজ করছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। এ ঘটনায় ঢাবি কর্তৃপক্ষও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, এ ঘটনায় হল প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শুক্রবার সকালে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে, জাবিতে গণপিটুনির শিকার হয়ে সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। বিচারসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দেন তারা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চ থেকে গতকাল বেলা ১১টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি সমাজবিজ্ঞান অনুষদ সড়কসহ কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটক সংলগ্ন একটি দোকানে বুধবার বিকালের দিকে বসে ছিলেন শামীম মোল্লা। খবর পেয়ে একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করেন। তখন শামীমকে ১৫ জুলাইয়ের হামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবীব। তবে হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলে শামীমকে গণধোলাই দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। 

একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম শামীমকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসে। সে খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানেও জড়ো হন। গেটের তালা ভেঙে আবারো তাকে গণধোলাই দেন তারা। এ-সংক্রান্ত কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের খবরে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল নিরাপত্তা শাখায় আসেন। এরপর শামীমকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ তাকে সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘তাকে (শামীম) রাত সোয়া ৯টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা পরীক্ষা করে জানতে পারি, উনি মারা গেছেন। মূলত উনি আগেই মারা গিয়েছিলেন।’

শামীম মোল্লার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির। তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আমরা এখনো হাতে পাইনি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা অফিসের তালা ভাঙা ও শামীমকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী কয়েকজনকে এরই মধ্যে চিহ্নিত করা গেছে। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ ও ৪৬তম ব্যাচের রাজন হাসান, ইংরেজি ৪৯তম ব্যাচের হামিদুল্লাহ সালমান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ককেও দেখা গেছে। তবে তারা মারধরে অংশ নিয়েছেন কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ‘শামীম মোল্লাকে যখন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, তখন সে পায়ে হেঁটেই গাড়িতে ওঠে। তবে কিছুক্ষণ পর পুলিশের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার করা হবে।’

এ ঘটনায় জড়িত আট শিক্ষার্থীকে গতকাল রাতে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এবিএম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়। তাতে বলা হয়, শামীম মোল্লার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডির প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণাদির (ভিডিও ফুটেজ ও ফটোগ্রাফ) ওপর ভিত্তি করে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়া, ৪৫তম ব্যাচের রাজু আহমেদ; ইংরেজি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান, ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদুল্লাহ সালমান; ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের জুবায়ের আহমেদ; ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আতিকুজ্জামান আতিক; কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সোহাগ মিয়া; বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব।

তাদের মধ্যে রাজন মিয়া, রাজু আহমেদ ও হামিদুল্লাহ সালমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে আহসান লাবিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুবককে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। মানবাধিকার সংগঠনটি গতকাল এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানায়। এমএসএফ বলেছে, এ দুই ঘটনা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ।

বিবৃতিতে এমএসএফ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এমএসএফ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনা দুটির বিষয়ে দ্রুততম সময়ের সঙ্গে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন