অনলাইন জুয়ার টাকা ই-মানি হয়ে পাচার হচ্ছে —সিআইডি প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

অনলাইন জুয়ার টাকা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে ই-মানিতে রূপান্তর করে পাচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিক্তির আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, ‘অনলাইন গ্যাম্বলিং এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর মাধ্যমে নিয়মিত দেশ থেকে ই-মানির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে।’ গতকাল সিআইডি সদর দপ্তরে ‘সাবমিশন অব রিসার্চ রিপোর্ট অন চ্যালেঞ্জ অব কন্ট্রোলিং ইলিগ্যাল মানি ট্রান্সফার থ্রু মোবাইল অ্যাপস: এ স্টাডি অন অনলাইন গ্যাম্বলিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, ‘সিআইডিসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা ও ডিভাইস জব্দসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারত। কিন্তু নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে অবৈধ অর্থ পাচারের ধারায় এখন সেটি সম্ভব হচ্ছে না। আমরা সহজে কিছু করতে পারছি না। নতুন আইন হওয়ার পর অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ের অভিযোগে কোনো মামলা হয়নি। অথচ অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ে অবৈধভাবে অর্থ পাচার বাড়ছে। এখনই অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ন্ত্রণ আইন দরকার। প্রকাশ্যে যারা জুয়া খেলে, তিন বা চার তাস, এর শাস্তি ছিল ৫০ বা ১০০ টাকা জরিমানা। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটা অনলাইন জুয়া, যা অনলাইন বেজ অপরাধ। এটা নিয়ন্ত্রণে কিন্তু দেশে আলাদা কোনো আইন নেই। যে আইনটা ধরে আমরা কাজ করেছি, সেটি হলো সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। সেটিতে বলা হয়েছে, অবৈধ ই-মানি ট্রানজেকশন। এ ধারা আগে ছিল কগনিজেবল (আমলযোগ্য)। এখন সেটি ননকগনিজেবল করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রমাণের আগে পুলিশ কাউকে ধরতে না পারায় বিষয়টি এখন আমাদের জন্য অনেক কঠিন।’

দেশে বর্তমানে সাড়ে ছয় হাজার অনলাইন জুয়া টিম রয়েছে জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘অনলাইন বেজ, ট্রেড বেজে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে যে পরিমাণ টাকা পাচার হয়, সেটি ই-মানির মাধ্যমে হচ্ছে। এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কারো কাছে নেই। ডাটাবেজ থাকলে এসব জানা সহজ হতো। আমরা যখন কাউকে ধরি, তখন কিছু তথ্য পাই। তবে এ মুহূর্তে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাড়ে ছয় হাজারের উপরে অনলাইন জুয়া টিম আছে। যারা বিভিন্ন উপায়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। ছয় হাজারের বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে বাংলাদেশে। অনলাইন গ্যাম্বলিং এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর মাধ্যমে নিয়মিত দেশ থেকে ই-মানির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। কোনো একটি সংস্থার পক্ষে এ অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি পিছিয়ে আছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন