সংসদে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

একযুগে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে গত অর্থবছরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, বিগত একযুগের মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব থেকে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

রোববার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের দেওয়া প্রশ্নোত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। সরকারি দলের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ,  ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯ দশমিক ০২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল।

সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক বিদেশে রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক খাত হতে রফতানি আয় হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

প্রতিমন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ এর প্রভাব, বৈশ্বিক মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজার আমেরিকা ও ইউরোপে মূল্যস্ফীতি প্রভৃতি কারণে রফতানি আয় অর্জনে শ্লথ গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পণ্যের চাহিদার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে বাংলাদেশে সরবরাহকারী হিসেবে রফতানি খাতে বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ার কারণে রফতানি প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, কানাডা, জাপান প্রভৃতি দেশে এ খাত থেকে রফতানি আয় অর্জনে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

একই দলের ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিশ্বের ২১০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেন রয়েছে। এসব দেশের মধ্যে ৮২টির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে চীনের সঙ্গে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আওয়ামী লীগের আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। তিনি জানান, সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ২০১১-১২ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ৩৬২ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।  একই সময়ে এসব দেশের সঙ্গে আমদানি ৫ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ১০৩ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নীত হয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তামাক ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা লাভ করায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি লাঘব হচ্ছে এবং ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মে পর্যন্ত পণ্য খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। এ সময়ে সেবা খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন