ভারি বর্ষণে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধস, প্রাণ হারিয়েছে ১০ জন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I কক্সবাজার

প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়া কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিয়মিত ঘটনা। গতকাল ঘটনার পর উদ্ধারকাজে অংশ নেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবকরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়। প্রবল বৃষ্টিপাতে মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্যাম্পটির ৮, ৯ , ১০ ও ১৪ নম্বর ব্লকে এ পাহাড়ধস ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্য আটজন রোহিঙ্গা  উদ্বাস্তু বলে জানা গেছে।

নিহতরা হলেন ১০ নম্বর ব্লকের আবুল কালামের ছেলে আবু মেহের (২৫), লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫৭), মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন (৪২), শরিফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি (১৯); চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকার আলী জহুরের ছেলে মো. হোসেন আহমেদ (৫০); ওই ক্যাম্পের আই-৪ ব্লকের আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮); বি-৮২ ব্লকের মো. হারেজ (৪) ও ফুতুনি (৩৪); উখিয়ার থাইংখালী এলাকার শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২) এবং আই-৯ ব্লকের মো. জামালের ছেলে মো. সালমান (৩)। 

আহত হয়েছে ১০-১২ জন। 

তবে কেউ নিখোঁজ নেই বলে উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন জানিয়েছেন। ঘটনার পর পরই উদ্ধারকাজে অংশ নেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবকরা। ওসি শামীম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে আরো প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে প্রশাসন। এ বিষয়ে কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আরো কেউ ঝুঁকিপূর্ণ আছে কিনা দেখা হচ্ছে। তাদেরও সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।

উখিয়া ক্যাম্পটি মাটির পাহাড়ের ওপর অবস্থিত। পাহাড় কেটে এ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। পাহাড়ধসের এলাকায় কমপক্ষে ৫০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বসবাস করে। ক্যাম্প এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের ক্যাম্পের ভেতরে যেতে বলা হচ্ছে। যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, এ রকম এক হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানান মিজানুর রহমান।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপসহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরো ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পাহাড়ধসের সতর্কতা সংকেতও দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন