সড়ক দুর্ঘটনা

ঈদের আগে ও পরে সাতদিনে নিহত ১২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে সাতদিনে (৮-১৪ এপ্রিল পর্যন্ত) সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১৯৭ জন। এ সময়ে সব মিলিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১৭টি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) প্রণীত দৈনিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে ঈদের আগের সাতদিন ও পরের চারদিন মিলিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৮৯ জনের। 

বিআরটিএর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঈদযাত্রার এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে ৯ এপ্রিল। ওইদিন সারা দেশে ২৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৬ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হন আরো ৬১ জন। 

ঈদে ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়ে মানুষের গ্রামমুখী যাতায়াত। বেশির ভাগ মানুষকে এ সময় যাতায়াত করতে হয় সড়কপথে। ফলে যানবাহনের চাপ বাড়ায় বৃদ্ধি পায় সড়ক দুর্ঘটনাও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাড়তি চাপের পাশাপাশি রাস্তায় ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল, পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা, বেপরোয়া গতি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতাসহ বিভিন্ন কারণে ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিমাণ বেড়ে যায়।

বিআরটিএ ২০২৩ সাল থেকে নিয়মিতভাবে দেশে দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আসছে। সংস্থাটির হিসাবে ২০২৩ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২৪ জনের মৃত্যু হয়। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। বিআরটিএ ছাড়াও যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। যদিও এসব সংস্থার তথ্যের সঙ্গে বিআরটিএ প্রকাশিত তথ্যে থাকে বেশ গরমিল।

সরকার ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তার বিধান যুক্ত করে। ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হয় গত বছরের ৩ জানুয়ারি। এ পর্যন্ত এক বছরের বেশি সময়ে ১৯৪ জনকে মোট ৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআরটিএ। 

সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য একটি আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন করেছে সরকার। প্রত্যেক মোটরযান মালিককে এ তহবিলে নিয়মিত চাঁদা দেয়ার নিয়ম রাখা হয়েছে। বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও প্রাইম মুভারের জন্য বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। ৭৫০ টাকা বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে মিনিবাস, মিনি ট্রাক ও পিকআপের জন্য। কার, জিপ ও মাইক্রোবাসের বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে থ্রি-হুইলার ও অন্যান্য যানবাহনের বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা। এর বাইরে মোটরসাইকেলের জন্য এককালীন ১ হাজার টাকা চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের অনুমোদন নিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড সময়ে সময়ে চাঁদার পরিমাণ কমাতে বা বাড়াতে পারবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন