বৈশ্বিক অটোমোবাইল খাতে বড় হিস্যা রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। সর্বশেষ প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশটির নামি ব্র্যান্ডগুলো নতুন নতুন উদ্ভাবন দিয়ে প্রতিনিয়ত ভোক্তাকে চমকে দিচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের আয়ের তথ্যেও এর প্রতিফলন দেখা গেছে। খবর দ্য কোরিয়া হেরাল্ড।
২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে এশিয়ার দেশটি অটোমোবাইল রফতানি বাবদ রেকর্ড ১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার আয় করেছে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি রফতানির এ পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর মধ্যে শুধু প্রান্তিকের শেষ মাস মার্চেই রফতানির পরিমাণ ৬২৯ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে রফতানির পরিমাণ ছিল ৫২০ কোটি ডলার।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো হাইব্রিড গাড়ির সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বাড়িয়েছে। প্রযুক্তির এ পরিমার্জনের সঙ্গে সঙ্গে দেশটির অটোমোবাইল খাতে রফতানির পরিমাণও বেড়েছে। তবে এর মধ্যে প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়িকে ধরা হয়নি।
মন্ত্রণালয় জানায়, হাইব্রিড গাড়ির রফতানির পরিমাণ মার্চে ৮৫ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা গত বছরের একই সময় থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি।
হাইব্রিড গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদী বলে জানান দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। তার মতে, এ ধরনের যানবাহনের চাহিদা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজার উভয় ক্ষেত্রেই অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা একই সঙ্গে গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণ খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় অটোমোবাইল রফতানি বাড়লেও সামগ্রিকভাবে দেশটিতে এ খাতে উৎপাদন কমেছে। চলতি বছর ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে।
উৎপাদন কমার পেছনে নীতিগত বিষয় রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অটোমোবাইল কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের জন্য কর্মদিবস কমিয়ে দিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে খাতসংশ্লিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা। এ কারণে দেশটিতে অটোমোবাইলের উৎপাদন কমেছে।
রফতানি থেকে রেকর্ড আয় করলেও অভ্যন্তরীণভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার অটোমোবাইল বাজার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে গত প্রান্তিকে দেশটিতে অটোমোবাইলের মোট বিক্রি ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ কমে ১ লাখ ৪৬ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে।
তবে মার্চে অভ্যন্তরীণ বিক্রির দিক থেকে পরিবেশবান্ধব গাড়িগুলো একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। অর্থাৎ ভোক্তা রুচিতে নতুন অভিমুখ দেখা যাচ্ছে। গত মাসে এ ধরনের পরিবহনের বিক্রি ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৬১ হাজার ইউনিটে পৌঁছেছে, যা গত বছরের নভেম্বরে ৫৮ হাজার ইউনিটকে ছাড়িয়ে গেছে।