যশোর-খুলনা মহাসড়ক

অপরিকল্পিত সংস্কারকাজে পথচলায় ভোগান্তি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I যশোর

ছবি : বণিক বার্তা

যশোর-খুলনা মহাসড়ক সংস্কার করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। ৩৮ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও পুনর্নির্মাণে গত ১০ বছরে কয়েকশ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে ধীরগতির কাজ, সিংহভাগ সড়ক দখল করে নির্মাণযজ্ঞ, সড়কের মধ্যেই নির্মাণসামগ্রী রাখা এবং কয়েক স্থানে এক লেনের সড়কে অধিক যানবাহনের চাপে যশোর অংশে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ভুক্তভোগীর দাবি, অপরিকল্পিত এ কাজের কারণে নয় বছর ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

অবশ্য সড়ক বিভাগ বলছে, যানজটের এসব স্থান চিহ্নিত করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থাগুলো। চিহ্নিত স্থানগুলোয় যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যশোর-খুলনা সড়কের পালবাড়ী থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান উঁচুনিচু হয়ে আছে। বসুন্দিয়া, প্রেমবাগ, টেঙ্গুটিয়া, ভাঙ্গাগেট, উড়োতলা মোড়, রূপদিয়া, মুড়লী, পদ্মবিলা ও অভয়নগরের নওয়াপাড়া শহরে সড়কের বিটুমিনের আস্তরণ উঠে অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে। পণ্যবাহী ট্রাক ও বাস চলছে হেলেদুলে। এক যানবাহন আরেক যানবাহনকে পাশ কাটাতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বছরের পর বছর সড়ক সংস্কারের ফলে সদরের বসুন্দিয়া, অভয়নগরের প্রেমবাগ, টেঙ্গুটিয়া, ভাঙ্গাগেট, নওয়াপাড়ায় তিন কিলোমিটারজুড়ে দিনের বেশির ভাগ সময় যানজট লেগে থাকছে। বসুন্দিয়া থেকে নওয়াপাড়া পৌঁছতে আধঘণ্টা সময় লাগলেও যানজটের কারণে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বাগেরহাটের মোংলা বন্দর থেকে ছোট ছোট জাহাজে পণ্য নওয়াপাড়া বন্দরে আসার পর এ সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। বাণিজ্যিকভাবে সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের খুলনার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। কিন্তু সড়কের কোথাও উঁচু আবার কোথাও নিচু। কোথাও বিটুমিনের আস্তরণ উঠে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে কংক্রিটের ঢালাই দেয়ার কাজ চলছে। তবে সড়কের অব্যবস্থাপনার কারণে ঈদযাত্রায় বাড়িফেরা মানুষের এবারও যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

নওয়াপাড়া বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী সুশান্ত সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অসহনীয় এ যানজটে নওয়াপাড়ার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় সময়মতো পণ্য পরিবহনেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি বাসগুলোর যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েন।’

যশোর বাস মালিক সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান বাবলু বলেন, ‘এক দশক ধরে এ সড়কে কাজ চলছে। কাজই শেষ হয় না। আধা ঘণ্টার রাস্তা অনেক সময় ৪-৫ ঘণ্টাও লেগে যায়। এতে যাত্রীরা একদিকে যেমন ভোগান্তিতে পড়েন অন্যদিকে পরিবহন চালকরা বাড়তি ট্রিপ মারতে পারে না।’ ঈদে ভোগান্তি আরো বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যশোর অঞ্চলে ঈদযাত্রায় সড়কে ভোগান্তি দূর করতে সড়ক বিভাগ কাজ করছে। যশোর-খুলনা সড়কের কিছু অংশ রাটিং দেখা দিয়েছে। সেখানে সংস্কার করা হচ্ছে। আশা করি ঈদের আগে কাজ শেষ হবে। তবে কিছু কাজ শেষ না করা গেলেও সংস্কার বন্ধ রাখা হবে। যাতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে না পড়েন।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন