সিরাজগঞ্জে সেতু নির্মাণ শেষের আগেই পিলারে ফাটল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ

ছবি : সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে হুড়াসাগর নদীর ওপর ২০২১ সালে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের মধ্যে। তবে এখনো তা শেষ হয়নি। উপরন্তু নির্মাণ শেষের আগেই সেতুর চারটি পিলারের একটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এজন্য এলজিইডি কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও অবহেলা রয়েছে। তাদের কারণে সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই চারটি পিলারের একটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ১৫ মার্চ রাত ১টার দিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ফাটল মেরামত করতে গেলে গ্রামবাসীর বাধার মুখে পড়েন। পরে তারা কাজ বন্ধ করে চলে আসেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাগর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে ঠিকাদার জহরুল ইসলাম সেতুর কাজটি করছেন। ঢালাইয়ের পর কংক্রিটের মধ্যে ছোট ছোট ফাঁক বা গর্ত হওয়ায় সমস্যাটি দেখা দিয়েছে। প্রকৌশলীদের পরামর্শে পানি সেচে পিলারটি মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। গ্রামবাসী এ কাজে বাধা দিতে পারেন, এজন্য রাতে মিস্ত্রি পাঠানো হয়েছিল।’

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ও সাগর কনস্ট্রাকশন সেতুটির নির্মাণকাজ করছে। ২০২২ সালের মে মাসে সেতুর পিলার স্থাপন করা হয়। নদীর পানি কমে যাওয়ায় পিলারের ফাটল নজরে আসে।

এলজিইডি বেলকুচি উপজেলা অফিসের সার্ভেয়ার মো. রোকনুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সে সময়ে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী বদলি হয়ে যাওয়ায় ২০২৩ সাল থেকে তিনি নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন। সম্প্রতি নদীর পানি সেচ দেয়ার সময় ফাটলের স্থানটি নজরে আসে। গ্রামবাসীর বাধার কারণে এখন নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে আমার যোগদানের পাঁচ মাস আগে সেতুর পিলার নির্মাণ করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তবে এলজিইডির রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। পানির মধ্যে ঠিকাদারের পিলারের ঢালাই কাজ করা ঠিক হয়নি।’

কর্মকর্তাদের কোনো গাফিলতি বা অনিয়ম নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘শুধু আমাদের প্রকৌশলীদের সেখানে থাকার কথা নয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষের প্রকৌশলীরও থাকার কথা। তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা ছাড়াই পানির মধ্যে পিলার স্থাপন করল কেন। প্রধান কার্যালয়ে বিষয়টি জানিয়ে বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। প্রধান কার্যালয়ে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাদের পরামর্শমতো কাজ করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন