গাইবান্ধায় হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে গবাদি পশু

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

ছবি— বণিক বার্তা।

গাইবান্ধায় চলমান তাপদাহে হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে গবাদি পশুপাখি। জেলায় গত কয়েকদিনে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১২টি গরু ও শতাধিক মুরগির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাপ কমাতে গবাদি পশুর ঘরের চালায় পানি ছিটিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন খামারিরা। তারা বলছেন, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত গবাদি পশুর অধিকাংশই বিদেশী জাতের। এমন পরিস্থিতিতে গবাদি পশুকে তাপদাহ থেকে সুরক্ষিত রাখতে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

 

দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে গত ৭ দিনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের উত্তর আনালেরতারি গ্রামের প্রতাপ ঘোষের ৪টি বিদেশী জাতের গরু মারা গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছে খামারের বাকি গরুগুলোও। খামারে একাধিক ফ্যান লাগিয়ে, এমনকি চালে পানি ছিটিয়ে পশুর ঘর ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে তাতেও খুব বেশি কাজ হচ্ছে না বলে জানান এই খামারি।

 

একই অবস্থা গাইবান্ধা সদরের উত্তর গিদারী গাছের ভিটা গ্রামের খামারি জোহা মিয়ার খামারেও। গত ৪ দিনে হিট স্ট্রোকে তার ৬টি গরু মারা গেছে। কাজে আসছে না প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শও।

 

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের গোয়াইলবাড়ি গ্রামের খামারি আবু তালেব বণিক বার্তাকে বলেন, তীব্র গরমে আমার খামারের একটি ফ্রিজিয়ান গরু গতকাল খাদ্যগ্রহণ বন্ধ করে দেয়। আজ রোববার গরুটি মারা যায়। গরুটির বাজারমূল্য অন্তত ৮৫ হাজার টাকা। তবে খামারের অন্যান্য গরু এখনো সুস্থ রয়েছে।

 

তবে দেশী গরু হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন খামারীরা। একই গ্রামের শাহিদা বেগম জানান, তার খামারের সবগুলো গরুই দেশী। এর ফলে এখনো কোনোটি আক্রান্ত হয়নি।

 

এছাড়াও সদর উপজেলার  গিদারী ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের আনা মিয়া, ফুল মিয়া ও নুরুজ্জামান মিয়ার ১টি করে গরু মারা গেছে। অন্যদিকে জেলার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর উপজেলায় হিট স্ট্রোকে শতাধিক মুরগির মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে কমে আসছে মুরগির খাদ্য গ্রহণ। ছোট হয়ে যাচ্ছে ডিম। এটিও চিন্তিত করে তুলছে খামারীদের।

 

গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তরুণ কুমার দত্ত বণিক বার্তাকে বলেন, তাপদাহে এ উপজেলায় এ পযর্ন্ত ১২টি গরু মারা যাওয়ার খবর জানতে পেরেছি। তীব্র গরমে খামারিদের সচেতন করার জন্য আমরা এ পর্যন্ত ২ হাজার লিফলেট বিতরণ করেছি। এছাড়া খামারিদের সতর্ক করতে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি, চিকিৎসা সেবাসহ পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।

 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, চলমান তাপদাহে গবাদি পশুর মৃত্যু হতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের প্রতিটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন