কারেন্ট পোকা দমনে সঠিক বালাই ব্যবস্থাপনার অভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ জমির ধান করেন্ট পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বালাই ব্যবস্থাপনার অভাবেই প্রত্যেক বছর আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটছে। ধানগাছ রোপণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নিলে কারেন্ট পোকার আক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা রোপণ, আইলের মাঝে বিলি কেটে দেয়া, ইউরিয়া সারের যথাযথ প্রয়োগ, আগাম প্রতিরোধ সক্ষম জাতের চারা রোপণের মতো ব্যবস্থাগুলোর পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমন মৌসুমে রংপুর, দিনাজপুর, খুলনার বিভিন্ন জেলায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে প্রতি বিঘায় ১২-১৫ শতক জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

ব্যাপারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক . আবদুল লতিফ বলেন, পোকা দমন করতে হলে আক্রান্ত ক্ষেতের পানি বের করে দিতে হবে। সূর্যের আলো বাতাস যাতে ধানগাছের গোড়ায় পৌঁছাতে পারে, সেজন্য ধানগাছের আইলের মাঝে ফাঁকা করে বা বিলি কেটে দিতে হবে। সন্ধ্যাবেলা ক্ষেত থেকে একটু দূরে আলোর ফাঁদ পেতেও পোকা দমন করা যেতে পারে। জমিতে ক্ষতিকর পোকার পাশাপাশি বন্ধু পোকাও থাকে। বন্ধু পোকাগুলো এসব ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে। তাই বন্ধু পোকা বাঁচাতে যেকোনো কীটনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিষয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান . শেখ শামিউল হক বলেন, বাদামি গাছফড়িং পোকা দমনের জন্য উর্বর জমির উপরিভাগে ইউরিয়া প্রয়োগ পরিহার করতে হবে। নিয়মিত ধানক্ষেত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ২০-২৫ সেন্টিমিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে হবে। আক্রমণপ্রবণ এলাকায় প্রতিরোধী জাত যেমন ব্রি ধান-২৮, ৩৩, ৩৫, বিনা ধান- চাষ করা যেতে পারে। ধানক্ষেতে হাঁস ছেড়ে দিলে প্রকোপ কমতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আমন মৌসুমে রংপুরের পাঁচ উপজেলায় লাখ ১২ হাজার ৪৩৫ হেক্টর, দিনাজপুরে প্রায় লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর, খুলনা অঞ্চলের নড়াইলে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। এর মধ্যে অক্টোবর-নভেম্বরে দেশের রংপুর, ঠাকুরগাঁও, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন