জিএফসিআইয়ের প্রতিবেদন

এশিয়ার শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্র এখনো সিঙ্গাপুর

বণিক বার্তা ডেস্ক

সিঙ্গাপুরের একটি বাণিজ্যিক এলাকা ছবি: হার্ভে কং

এশিয়ার শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে সিঙ্গাপুর। মহাদেশের আরেক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কেন্দ্র হংকংকে পেছনে ফেলেছে শহরটি। সম্প্রতি গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টার ইনডেক্সের (জিএফসিআই) এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

প্রতি ছয় মাস অন্তর বিশ্বের শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্রগুলোর তালিকা প্রকাশ করে জিএফসিআই। বিভিন্ন সূচকের ওপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর র‍্যাংকিং করা হয়।

জিএফসিআইয়ের ৩৫তম সমীক্ষা অনুসারে, আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ শহরের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। দ্বিতীয় অবস্থানে যুক্তরাজ্যের লন্ডন। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে এশিয়ার দুই কেন্দ্র সিঙ্গাপুর ও হংকং। আর পঞ্চম স্থানে রয়েছে সানফ্রান্সিসকো।

শেনজেনের চায়না ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট এবং লন্ডনের থিংক ট্যাংক জেড ইয়েন পার্টনার্সের যৌথ উদ্যোগে সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এবারের সমীক্ষায় ১৩৩টি আর্থিক কেন্দ্রকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শীর্ষ ২০ আর্থিক কেন্দ্রের কোনোটিই চার স্থানের বেশি ওপর বা নিচে ওঠানামা করেনি। সংস্থাটির ৩৪তম সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতির অর্থনৈতিক প্রক্ষেপণে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না।

প্রতিবেদন অনুসারে, তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লন্ডনের চেয়ে বড় ব্যবধানে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে নিউইয়র্ক। তবে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা থাকা সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের মধ্যে ব্যবধান মাত্র এক পয়েন্ট। এছাড়া পাঁচ নম্বরে থাকা সানফ্রান্সিসকোর সঙ্গেও আগের কেন্দ্রের স্পষ্ট ব্যবধান রয়েছে।

এদিকে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র অনুসারে পাঁচটি মানদণ্ডের সবকটিতে হংকংয়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিঙ্গাপুর। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়িক পরিবেশ, মানবিক মূলধন, অবকাঠামো, আর্থিক খাতের উন্নয়ন এবং সুনাম ও খ্যাতি। জিএফসিআইয়ের সমীক্ষা মতে, ২০২২ সালে প্রথমবার হংকংকে ছাড়িয়ে এশিয়ার শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল সিঙ্গাপুর।

সমীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের রেটিংয়ে গড় বৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সাংহাই এক ধাপ এগিয়ে ষষ্ঠ স্থানে এবং সিউলও এক ধাপ উন্নতি করে দশম স্থানে উঠে এসেছে। অন্যদিকে চীনের রাজধানী বেইজিং দুই ধাপ পিছিয়ে ১৫তম স্থানে নেমে গেছে।

সমীক্ষায় অংশ নেয়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার উত্তরদাতারা রেটিংয়ের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের কেন্দ্রগুলোকে ওপরের দিকে রেখেছেন।

জিএফসিআইয়ের সমীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে কোন কেন্দ্রগুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে—এ প্রশ্নের জবাবে উত্তরদাতারা ১৫টি আর্থিক কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করেন। যার মধ্যে আটটি এশিয়া অঞ্চলের। এতে সর্বাধিক সমর্থন পেয়ে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল আর ঠিক পরের স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। এ প্রশ্নের উত্তরে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই। তার পরের অবস্থান হংকংয়ের। এছাড়া এ তালিকায় স্থান পাওয়া এশিয়ার অন্য বাণিজ্যিক কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে চীনের সাংহাই, বেইজিং, শেনজেন, দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান ও ভারতের গুজরাটের গিফট সিটি।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোকজন সাধারণত বাইরের কেন্দ্রের তুলনায় নিজেদের কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি আশাবাদী। এক্ষেত্রে হংকং ও সিঙ্গাপুরের লোকেরা তাদের কেন্দ্রগুলোর ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী।

প্রতিবেদনে দুই সেট রেটিংসহ একটি ‘‌ফ্যাক্টর অ্যাসেসমেন্ট’ মডেল ব্যবহার করে আর্থিক কেন্দ্রগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। একটি সমীক্ষা এসেছে উত্তরদাতাদের কাছ থেকে এবং অন্যটি পরিমাণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পরিসংখ্যান মডেল থেকে। চূড়ান্ত র‍্যাংকিং তৈরিতে উভয় তথ্য একত্র করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন