২০২৬ সাল থেকে চালু হতে পারে ই-কমার্স ট্যারিফ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা ছবি: ডব্লিউটিও

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) এক বৈঠকে সম্প্রতি ই-কমার্সের ডিজিটাল লেনদেনের ওপর শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ আরো দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। তবে ২০২৬ সাল থেকে ডিজিটাল পণ্যের ওপর ই-কমার্স বা ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে শুল্ক চালু হতে পারে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কোনো দেশে ডিজিটাল পণ্যের দামও বাড়তে পারে। ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা এ পূর্বাভাস করেছেন। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা বলেন, ‘কয়েকটি দেশের সরকার ৩০ বছরের ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে শুল্কছাড়ের মেয়াদ দুই বছরের মধ্যে শেষ হয়ে গেলে তা বাড়াতে রাজি নাও হতে পারে। শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ আরো বাড়ানো জন্য একাধিক সদস্যদেশের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন।’

ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘দুই বছর খুবই যৌক্তিক সময়সীমা। আমি মনে করি না ডব্লিউটিওর সদস্যরা প্রতি বছর এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। তাই তারা একটি নির্দিষ্ট তারিখে একমত হয়েছেন।’

এদিকে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কিছু উন্নয়নশীল দেশ আশা করছে অনলাইনে ডিজিটাল লেনদেনের ওপর শুল্ক চালু হলে তা তাদের কর রাজস্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে অবদান রাখবে। তবে ডব্লিউটিওর অন্য দেশের সদস্যরা যুক্তি দেখিয়েছেন, এ পদক্ষেপের ফলে খরচ বাড়ার পাশাপাশি প্রতিযোগিতা কমে আসবে।

ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলো ডব্লিউটিওর সাম্প্রতিক বৈঠকে ই-কমার্স শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য তদবির করেছিল। তারা এখনো আশা করছেন, সদস্যদেশগুলো ২০২৬ সালেও তা অব্যাহত রাখবে।

গ্লোবাল সার্ভিসেস কোয়ালিশন জানায়, শুল্ক আরোপ করা হলে ডিজিটাল বাণিজ্য এবং ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ের জন্য ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি প্রতিযোগিতাও কমে আসবে।

সম্প্রতি ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা এবং ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী শ্রী মুলিয়ানি ইন্দ্রাবতীর মধ্যে আলোচনার পর ইন্দোনেশিয়া শুধু দুই বছরের জন্য ই-কমার্সের লেনদেনের ওপর শুল্কছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে। এদিকে ভারত ধারাবাহিকভাবে শুল্ক ছাড় প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও শেষ মুহূর্তে তারাও ছাড়ের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের মতো অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাশাপাশি ভারত বিশ্বাস করে তারা রাজস্ব হারাচ্ছে, কারণ বেশির ভাগ ডিজিটাল পণ্য ধনী দেশ থেকে আমদানি করা হয়। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে ডিজিটাল পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের জন্য একটি সিস্টেম তৈরি করছে।

এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা আরো জানান, ২০২৬ সালের পরেও ই-কমার্স শুল্ক ছাড় অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৮০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে। তবে তিনি জেনেভায় ডব্লিউটিওর মিশনের মাধ্যমে সদস্যদেশগুলোর সরকারকে ই-কমার্স পণ্যের লেনদেনের ওপর শুল্ক আরোপ চালু করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সবার উচিত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া।’

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টসহ অন্যান্য গোষ্ঠীর গবেষণায় দেখা গেছে, ই-কমার্স পণ্যের লেনদেনের ওপর শুল্ক চালু করা হলে উন্নত দেশের চেয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ তারা উৎপাদনশীলতার জন্য অনলাইন টুলগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিওর ১৩তম বার্ষিক মন্ত্রী পর্যায়ের এবারের বৈঠকে ডিজিটাল বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্যিক সীমাবদ্ধতা ও অর্থনৈতিক সুরক্ষার মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন