এভিয়েশন

লালমনিরহাটে হবে উড়োজাহাজ তৈরির গবেষণাগার

এয়ার ভাইস মার্শাল এএসএম ফখরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য। উড়োজাহাজ মহাকাশ গবেষণার জন্য দেশের প্রথম বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন বণিক বার্তার

শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষত্ব জানতে চাই...

আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এভিয়েশন, মহাকাশ কারিগরি বিষয়ে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পেশাদার জনশক্তিতে রূপান্তর করা হবে। এছাড়া এভিয়েশন অ্যারোস্পেস সম্পর্কিত বিষয়গুলোয় বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রদান গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের রূপকল্প ২০৪১-এর আলোকে দক্ষ, পেশাদার উদ্যমী জনশক্তি তৈরি করা হবে। দুই ভিশন মিশন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু হয়।

ভিশন মিশনে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এভিয়েশন খাতে শিক্ষার্থীদের পেশাদার জনশক্তি হিসেবে তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে দক্ষ প্রশিক্ষকের বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অভিজ্ঞ শিক্ষক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একদল পেশাদার প্রশিক্ষক প্রদান করে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে আমাদেরকে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছে। বিশেষায়িত বিষয়ে স্থাপন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের পিকো স্যাটেলাইট ল্যাব, স্পেস সিস্টেমস ল্যাব, অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ল্যাব, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনস ল্যাব, স্পেস এভিয়োনিকস অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং ল্যাব, অ্যাডভান্সড অ্যারো ডায়নামিকস অ্যান্ড প্রপালশনস ল্যাব, ড্রোন অ্যান্ড স্যাটেলাইট ল্যাবসহ বেশকিছু গবেষণাগার। দেশী-বিদেশী অভিজ্ঞ একাডেমিশিয়ানদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ব্যবহারিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত আধুনিক গবেষণাগারের পাশাপাশি বিমান বাহিনী, এমআইএসটি বিমান সংস্থাগুলোর সহায়তা নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এভিয়েশন বিষয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা কী কী দক্ষতা অর্জন করছেন?

এরই মধ্যে আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তি, মেধা গবেষণাগার কাজে লাগিয়ে ড্রোন তৈরি সফল উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছি। এছাড়া আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে উড়োজাহাজ তৈরির কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে, যা আপনাদের পরবর্তী সময়ে অবহিত করা হবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব সুবিধা কাজে লাগিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশীয় প্রযুক্তিতে বিমান, স্যাটেলাইট তৈরি, রকেট উেক্ষপণের দক্ষতা অর্জন করবেন। বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় সে লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে। সম্প্রতিরকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২প্রোগ্রামের আওতায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বুটক্যাম্পিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনে সারা দেশের ১২১টি দলের মধ্য থেকে ৩২টি নির্বাচিত দলকে বিএসএমআরএএইউর শিক্ষকরা বিশেষজ্ঞরা রকেট্রি বিষয়ে কারিগরি অন্যান্য পরামর্শ প্রদান করেন।

বিষয়ে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ কেমন?

আপনারা জানেন যে অন্যান্য খাতের চেয়ে উড়োজাহাজ মহাকাশ শিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদার আলোকে আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বিএসএমআরএএইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রীর সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উড়োজাহাজ চলাচলের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এভিয়েশন অ্যারোস্পেস খাতের তৈরি দক্ষ জনশক্তি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লালমনিরহাটে এভিয়েশন সিটি উড়োজাহাজ তৈরির গবেষণাগার গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কেমন হবে সেই এভিয়েশন সিটি গবেষণাগার?

লালমনিরহাটকে একটি এভিয়েশন সিটিতে উন্নীত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় দৃষ্টিনন্দন অস্থায়ী ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বিমান বাহিনীর স্থানীয় ইউনিট প্রশিক্ষণের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ভবিষ্যতে এখানে বিমান তৈরির কারখানা নির্মাণ রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা প্রদানের জন্য আধুনিক ভৌতকাঠামোসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সংযোজিত থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

এভিয়েশন শিল্পে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জনে একদল দক্ষ পেশাদার মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, ইউজিসিসহ সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। বাংলাদেশকে একটি উন্নত, প্রযুক্তিনির্ভর দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় আসীন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যথাসাধ্য ভূমিকা পালন করব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন