বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

নাহিদ-আসিফসহ প্রধান তিন সমন্বয়ক হাসপাতাল থেকে ডিবির হেফাজতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে রাজধানীর একটি হাসপাতাল থেকে গতকাল নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একদল ব্যক্তি তাদের হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলামের এক আত্মীয়ের বরাত দিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নাহিদের এক আত্মীয় হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোনে জানিয়েছেন যে আজ (গতকাল ২৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নাহিদ ও আসিফকে হাসপাতাল থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

এ সময় শুধু নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের কথা বলা হলেও পরে জানা যায় আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তবে সে সময় তার সম্পর্কে নিশ্চিত করে কোনো তথ্য দিতে পারেননি সারজিস আলম। 

পরে রাত ১২টা নাগাদ ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম এ তিন শিক্ষার্থীকে ডিবির হেফাজতে নেয়ার বিষয়টি বণিক বার্তাকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের তিনজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিষয়েও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ 

এ সময় তাদের কোনো মামলায় গ্রেফতার বা আটক দেখানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ 

এর আগে ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত ১১টায় রাজধানীর হাতিরঝিলের মহানগর আবাসিক এলাকা থেকে আসিফ মাহমুদকে এবং মধ্যরাতে নন্দীপাড়ার একটি বাসা থেকে নাহিদ ইসলামকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নসহ ২১ জুলাই রোববার নাহিদ ইসলামকে এবং ২৪ জুলাই বুধবার আসিফ মাহমুদের সন্ধান পাওয়া যায়। এর পর থেকে তারা দুজন একই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। 

উদ্ধারের পর নাহিদ অভিযোগ করেন, তাকে সাদা পোশাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার কাছ থেকে আন্দোলনের বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

অন্যদিকে আসিফ মাহমুদের অভিযোগ ছিল, তাকে ফুটপাত থেকে তুলে নেয়া হয়। আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে ভিডিও বার্তা দিতে বলা হয়। তবে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন