পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি

রাজশাহীতে ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজশাহী

ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীতে সড়কের ওপর বসেইপ্রতীকী পরীক্ষা প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী নার্সিং শিক্ষার্থীরা। গতকাল কর্মসূচি পালনকালে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চারজন সুস্থ হয়ে ফিরলেও ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে তারা ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেন। এতে অংশ নেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গতকাল ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা নয় মাস পিছিয়ে গেছি। কবে নাগাদ পরীক্ষা হবে এর কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে ২৩টি কলেজের প্রায় তিন হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তায়।

এদিন বিএসসি চতুর্থ বর্ষের রিসার্চ-ইন-নার্সিংয়ের প্রতীকী পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি চলাকালে (প্রতীকী) শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকেই চারজনকে এক এক করে উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কক্ষ পরিদর্শক (এক্সটারনাল ইন্টারনাল) করা হয়। সময় হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারী সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখিয়ে ফলও প্রকাশ করা হয়। হতাশ হয়ে প্রতীকী বিষপান করেন শিক্ষার্থীরা। এতে অসুস্থ হলে অন্তত ১৫ জনকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। এর মধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে ফিরলেও ভর্তি করা হয় তাদের ১১ জনকে। এদের মধ্যে দুজন রাজশাহী নার্সিং কলেজের, একজন উদয়ন নার্সিং কলেজের বাকিরা রংপুর এবং লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

প্রতীকী পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবেই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ফেল করানো হয়। আন্দোলনে দাবি আদায় হলেও ফলে প্রভাব বিস্তারের শঙ্কায় তারা আতঙ্কিত। অসুস্থ হয়ে অনেককেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, ‘যে সময়ে পড়ার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে থাকার কথা, হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে গিয়ে রোগীদের সেবা করার কথা; সেই সময়ে রোদ-বৃষ্টি বাধা মোকাবেলা করে আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এজন্য রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে এসে দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে আছি। বেশ কয়েকজন অসুস্থ। দাবি না মানলে মৃত্যু ছাড়া পথ নেই আমাদের।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ (ইএমও) ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হওয়ায় অন্তত ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা স্থিতিশীল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন