দেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কড়া লকডাউনের মধ্যেই প্রবাসী কর্মীদের জন্য পাঁচটি দেশে ফ্লাইট চালু করে সরকার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো চীন। একই সঙ্গে এসব দেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন বাকি দেশগুলোতেও। এ ছয়টি দেশ থেকেও বাংলাদেশে আসা যাবে। তবে অন্য কোনো দেশ থেকে এসব দেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করা যাবে না।
গতকাল এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ট্রানজিট যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রবাসী কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন। অন্য যাত্রীরা পরিবারসহ ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে পরিবারের ক্ষেত্রেও প্রবাসী কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এছাড়া ঢাকা থেকে যেসব ফ্লাইট অন্যান্য গন্তব্যে যাবে, সেসব ফ্লাইটে ওয়াইড বডি উড়োজাহাজ হলে সর্বোচ্চ ২৮০ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। বোয়িং-৭৭৭ ও বোয়িং-৭৪৭ উড়োজাহাজগুলো দিয়ে পরিচালিত ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ৩৫০ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে। আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এ নির্দেশনা বহাল থাকবে।
এ প্রসঙ্গে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, দেশে চলমান বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের নাগরিকরা কাজ করছেন। এসব বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অন্য দেশের পাশাপাশি চীনের ফ্লাইটও চালু করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চীনে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিশেষ বিবেচনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, চায়না ইস্টার্ন ও চায়না সাদার্ন এয়ারলাইনসকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্য রুটগুলোর মতোও এ রুটে ফ্লাইট পরিচালনায় যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মানতে বাধ্য থাকবে এয়ারলাইনসগুলো।
আজ থেকে চালু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট
আজ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচল করার অনুমতি দিয়েছে বেবিচক। মূলত প্রবাসী কর্মীদের কথা বিবেচনায় রেখে এবার সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে সাধারণ যাত্রীরাও জরুরি প্রয়োজনে যাওয়া-আসা করতে পারবেন। গতকাল এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
এরই মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, যশোর ও সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহ করতে বলছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। কোন গন্তব্য থেকে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ ফ্লাইট চলাচল করবে, তা-ও সার্কুলারের মাধ্যমে এয়ারলাইনসগুলোকে জানিয়েছে বেবিচক।
কভিড-১৯-এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় ১৪ এপ্রিল সকাল থেকে শুরু হয় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা। পরবর্তী সময়ে প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরা নিশ্চিত করতে ১৭ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে বিশ্বের পাঁচটি দেশে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয় বেবিচক। এ পাঁচটি দেশ হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। তবে শর্ত ছিল, শুধু প্রবাসী কর্মীরা এসব ফ্লাইটে যেতে পারবেন। আর দেশে এলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাদের।