নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে অনিশ্চয়তাপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানুষ ব্যয় কমিয়ে বেশি সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগ দিয়েছিল। এ কারণে নতুন গাড়ি বিক্রির তুলনায় ব্যবহূত গাড়ি ও ভাড়া গাড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন গাড়ির বিক্রি ৩০ শতাংশের বেশি কমেছে। এ খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাসের টিকাদান অভিযান সম্পন্ন না হওয়া এবং গ্রাহকরা পরিস্থিতি সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা বজায় থাকবে। খবর গালফ নিউজ।
মহামারীতে ২০২০ সালে গ্রাহকরা যেসব বাধার মুখোমুখি হয়েছেন, সেগুলো থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করবেন। অ্যারাবিয়ান অটোমোবাইল কোম্পানি, নিশান, রেনোঁ ও ইনফিনিটির ডিলারশিপের সিইও মিশেল আয়াত বলেন, অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন, তারা কেন নতুন গাড়ি কিনবেন। গাড়ির মালিকানা থেকে চিন্তাভাবনা পরিবর্তন হয়ে গাড়ির ব্যবহারকারীতে রূপান্তর ঘটছে। এজন্য তারা গাড়ি ভাড়া নিয়ে চলাচল করছে কিংবা ব্যবহূত গাড়ি কিনছে। মহামারীতে অনেক গ্রাহক গণপরিবহন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে গাড়ি ভাড়া কিংবা ব্যবহূত গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনা করেছিলেন। এটি এ সময়ের নিদর্শন এবং গাড়ি শিল্পকে তা মেনে নিতে হবে।
গত বছর আরব আমিরাতে ১ লাখ ৬৫ হাজার ইউনিট নতুন গাড়ি বিক্রি হয়েছে, ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল যেখানে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউনিট। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমাতে জারি করা লকডাউনে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে গাড়ি খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায়। এ তিন মাসে সামগ্রিক বিক্রি ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। তবে পরবর্তী ছয় মাসে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে নতুন গাড়ির বিক্রি সামান্য পুনরুদ্ধার হয়েছিল। যদিও সেটি ২০১৯ সালের একই সময়ে তুলনায় ৩০ শতাংশেরও বেশি কম রয়েছে।
মিশেল আয়াত বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাংকগুলোর এগিয়ে আসা উচিত। নতুন গাড়ি বিক্রিতে ব্যাংকগুলো আরো বেশি সহায়তা করতে পারে। ব্যাংকগুলো গাড়ি কেনার জন্য সবাইকে অর্থসহায়তা দিচ্ছে না। এটি এ খাতের ব্যবসাকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে এখনো অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। এগুলো ছাড় দেয়া উচিত বলে মনে করেন আয়াত।
তার মতে, এটি সম্ভবত প্রথম কোনো বছর, যেখানে নতুন মডেলের গাড়ি আগের মডেলের সমান দামে বাজারে আনা হয়েছে। অথচ সাধারণ পরিস্থিতিতে নতুন বছরে নতুন মডেল এলে দাম কিছুটা বেশি থাকে। কিন্তু বছরটি একেবারেই অন্য রকম ছিল।
দুবাই চেম্বারের অধীনে কার ডিলারস বিজনেস গ্রুপের প্রধান আয়াত বলেন, নতুন মডেল হলেও দাম কম রাখা হয়েছে। কারণ প্রত্যেকে বুঝতে পারছে যে নতুন গাড়ি কিনতে ক্রেতাদের ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের কিছু করা দরকার। বি ও সি সেগমেন্টের (মধ্যম দামের গাড়ি) যানবাহনের দাম গত বছরের তুলনায় একই রকম রয়েছে।
