দেশে-বিদেশে মৃৎ শিল্পের এখন অনেক চাহিদা

ফিচার প্রতিবেদক

আগস্ট শুরু হয়েছে শিল্পী মৃন্ময়ী আর্ট গ্যালারির পরিচালক সামিনা এম করিমের একক অনলাইন প্রদর্শনী। এটি চলবে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। দীর্ঘদিন ধরে ভাস্কর্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি। প্রদর্শনীতে শিল্পীর ভাস্কর্যকর্মসহ চিত্রকলাও প্রদর্শিত হচ্ছে। সম্প্রতি টকিজের সঙ্গে প্রদর্শনীটি নিয়ে কথা বলেছেন শিল্পী।

প্রদর্শনীর আদ্যোপান্ত

পরিকল্পনা ছিল বছর ঢাকায় প্রদর্শনী করার। কিন্তু প্যান্ডেমিকের কারণে এখন গ্যালারিগুলো বন্ধ। তাই অনলাইনে প্রদর্শনীর কথা চিন্তা করি। সে ভাবনা থেকেই একক প্রদর্শনীটির শুরু। এটি স্পন্সর করছেন আট্রিটিউড অনলাইন গ্যালারি এবং পার্টনার হিসেবে রয়েছে জাগো ফাউন্ডেশন। প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয়েছে অনলাইনে। উদ্বোধন করেছেন স্বনামধন্য শিল্পী নাজলি লায়লা মনসুর। প্রদর্শনীটি পরিচালনা করেছেন পণ্ডিত শিল্পী একেএম আলমগীর হক স্বপন এবং শিল্প ইতিহাসবিদ, গবেষক শিক্ষক রেজাউল করিম সুমন।

উদ্দেশ্য

বর্তমান মহামারী পরিস্থিতিতে অনলাইন প্রদর্শনীটি করার মূল উদ্দেশ্য অর্থ সহায়তা। প্রদর্শনীর মাধ্যমে চিত্রকর্ম বিক্রি করে সেই অর্থের একটা অংশ জাগো ফাউন্ডেশনকে দেয়া। সংগঠনটি শিশুদের নিয়ে কাজ করে।

চিত্রকর্মের বিষয়বস্তু

প্রদর্শনীতে ৭৩টি চিত্রকর্ম রয়েছে। করোনার সময় করা বেশকিছু কাজসহ প্রদর্শনীতে পেইন্টিংসও থাকছে। বিড়াল নিয়ে কাজ করি। তাই বিড়াল নিয়ে কিছু পেইন্টিংস আছে। আছে বেশকিছু ভাস্কর্যও। এছাড়া ফোক টেপা পুতুল নিয়ে দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি, সেই পুতুলের ওপর কিছু কাজ রয়েছে।

আশানুরূপ সাড়া

প্রদর্শনীটির মধ্য দিয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজ বিক্রিও হয়ে গেছে। অনেকেই কাজগুলো সংগ্রহ করছেন। দীর্ঘসময় ধরে কাজ করছি কিন্তু কখনই চিত্রকর্ম বিক্রি করিনি। সবগুলো স্টুডিওতে রয়েছে। এবারই প্রথম চিত্রকর্ম বিক্রি করছি। জাগো ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিশুদের অর্থ সহায়তা করতেই মূলত এটি করা।

আগামীর পরিকল্পনা

দেশে ভাস্কর্য শিল্প মাধ্যমে নারীদের কাজের পরিমাণ কম। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে আছি। এখানে ভাস্কর্য শিল্প চর্চা এখনো অনেক পিছিয়ে। ২৫ বছর ধরে মাধ্যম নিয়ে কাজ করছি। আমার উদ্দেশ্য কাজের পাশাপাশি প্রদর্শনী করা। অনলাইনে প্রদর্শনীর বিষয়টি থাকবে, এর সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গ্যালারিতে ঘন ঘন প্রদর্শনীর আয়োজন করা। যাতে এসব কাজ দেখে ভাস্কর্য মাধ্যম নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী হয় শিক্ষার্থীরা। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় স্কাল্পচার বিভাগে মেয়েদের সংখ্যা এখনো কম। একটা ধারণা রয়েছে, মাধ্যমের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। কিন্তু দেশে-বিদেশে মৃৎ শিল্পের এখন অনেক চাহিদা। সবাই যদি শিল্পের চর্চা শুরু করে, তাহলে শিল্পটা আবার বেঁচে উঠবে। শিল্প রফতানি করে অর্থোপার্জনও সম্ভব। আমি নিজে কাজের পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের ওয়ার্কশপ করাই এবং শিল্প মাধ্যম নিয়ে কাজের প্রতি তাদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন