বেঁচে থাকলে অনেক কাজ করতে পারব

ফিচার প্রতিবেদক

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর অনলাইনে নানা সচেতনতামূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ঈদের আগে তিনি আয়নাবাজি শিরোনামে সচেতনতামূলক একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন। আয়নাবাজি চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত একটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। কাজেই নামটি ব্যবহার করে মানুষকে সচেতন সাহস জোগানোর পরিকল্পনা থেকে আয়নাবাজি ওয়েব সিরিজটি তৈরির উদ্যোগ নেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি টকিজের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেতা। তার সঙ্গে আলাপের কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো

 শুরুতেই জানতে চাই আপনি সচেতনতামূলক ওয়েব সিরিজ আয়নাবাজি-তে কাজ করেছেন। সময় ধরনের কাজ আরো হওয়া উচিত কিনা?

আয়নাবাজি এক ধরনের চিন্তার জায়গা থেকে করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে সময় ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ হওয়া উচিত। একই ধরনের কাজ হতে থাকলে গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক ব্যবস্থাএসব দিক থেকে আমরা মানুষের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিনিয়ত আমরা বিশ্বাস ভঙ্গ করছি। কারণে সাধারণ মানুষকে কোনোকিছু বিশ্বাস করানো এখন কঠিন হয়ে গেছে। সচেতনামূলক কাজগুলোর যেন গুরুত্ব থাকে, মানুষের কাছে পৌঁছায় এটা হলো মূল বিষয়। কারণ কোন কাজটি মানুষ গ্রহণ করবে এটা বলা অনিশ্চিত। সেই জায়গা থেকে আমি বলব, ঠিক আয়নাবাজির মতো নয়, ভিন্ন ধরনের আইডিয়া নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ হওয়া প্রয়োজন।


এখন অনলাইনভিত্তিক অনেক কার্যক্রম হচ্ছে। এগুলো কীভাবে দেখছেন? পরবর্তী সময় কাজের ক্ষেত্রে এগুলো কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা?

এখানে গুরুত্বের বিষয় হলো কী উদ্দেশে কাজগুলো করা হচ্ছে। যদি মানুষকে সচেতন করার জন্য হয়, তাহলে ঠিক আছে। কারণ এখন ঘরে থাকতে হবে। আর ঘরে থাকলে অনলাইনে করা ছাড়া উপায় নেই। মানুষকে সচেতন করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে মানুষের সদিচ্ছা থাকতে হবে। লোক দেখানো নয়, সত্য উদ্দেশ্যে কাজ করতে হবে।

আর এখন যে কাজগুলো হচ্ছে, এগুলো তো অ্যামেচার। প্রতিদিন আমি অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা বা প্লাটফর্মে যুক্ত হচ্ছি। এখন কোনো উপায় নেই, তাই এভাবে যুক্ত হতে হচ্ছে। যখন কোনো প্লাটফর্মে যুক্ত হই, তখন নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন নেটওয়ার্ক সমস্যা। এগুলো আসলে বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে করছি। কমসংখ্যক মানুষের সঙ্গে। এটা প্রফেশনাল কাজের জন্য নয়। করোনা পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার আমাদের আগের মতো কাজ করতে হবে। কারণ এখানে অনেক প্রযুক্তির বিষয় রয়েছে। আর প্রভাবের কথা যদি বলি, সেটা তো আগেও ছিল। ইউটিউবে যে যার ইচ্ছেমতো কনটেন্ট ছেড়ে দিত। তবে করোনা-পরবর্তী সময় মানুষের আচরণে, অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। এখন আমরা ঘরবন্দি হয়ে আছি। যখন কাজে ফেরা হবে অধিকাংশ মানুষের ওপর এর একটা প্রভাব পড়তে পারে। আবার নাও পারে।

করোনা আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করলেন কি?

করোনার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে যেভাবে দেখতাম, এখন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এক-দেড় মাস ধরে লক্ষ করলাম, আগে আজেবাজে অনেক কনটেন্ট দেখা যেত। সেগুলো কমে এসেছে। অধিকাংশ মানুষের মধ্যে গুরুত্বভাব চলে এসেছে। নিজের বোধ-বুদ্ধির জায়গা থেকে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছে। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে। তবে কিছু মানুষ তো আছেনই, যারা সবসময় কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে নানা আক্রমণাত্মক কথা বলে থাকেন।

অনেকেই শুটিং শুরুর পরিকল্পনা করছেন। বিষয়ে আপনার মতামত...

এটা আসলে ব্যক্তির নিজস্ব ভাবনা। দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যাবে, তখন মানুষ কাজে যেতে বাধ্য হবে। এটা নিয়ে কোনো সঠিক মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না। জীবনজীবিকার জন্য কেউ যদি কাজ করতে যায়, তাকে নিজ দায়িত্বে যেতে হবে। তবে আমি আরো কিছুদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। আমি দেখব পরিস্থিতি কতটুকু নিয়ন্ত্রণে এল। যখন মনে হবে এখন বাইরে যাওয়া যাবে, তখন নিজের নিরাপত্তা বজায় রেখে বের হব। আমাকে বেশ কয়েকজন নির্মাতা কাজের কথা বলেছেন। কিন্তু আমার কাছে মুহূর্তে কাজের চেয়ে জীবন অনেক বড়। বেঁচে থাকলে অনেক কাজ করতে পারব।

আয়নাবাজি ছবির কথা দিয়ে আলাপ শেষ করতে চাই। আপনার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ছবির প্রভাব কতখানি?

আমি যে কয়টি ছবিতে কাজ করেছি, প্রত্যেকটিই আমার অভিনয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রতিটি ছবিরই আলাদা ভূমিকা আছে। দর্শকরাই ভালো বলতে পারবেন আমার কোন চরিত্রটি তাদের ভালো লেগেছে। একজন শিল্পীর এটা বিচার করা ঠিক না। কোন কাজ কতটুকু সম্মান, জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে এটা দর্শকের বিচার। পাঁচ-ছয়টি ছবি মিলিয়ে আমার অভিনয় জীবনের একটা বড় অংশ। সেদিক থেকে কোনো ছবির গুরুত্বই আমার কাছে কম না। আয়নাবাজি জনপ্রিয় একটি ছবি। সেক্ষেত্রে ছবির ভূমিকা তো অবশ্যই রয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন