২২ বছরেও চালু হয়নি খুলনা ট্রাক টার্মিনাল ভবন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, খুলনা

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

খুলনা নগরের গল্লামারী-সোনাডাঙ্গা সড়কের পাশে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ট্রাক টার্মিনাল। এটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আরো ১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা হয় প্রশাসনিক ভবন। তবে ২২ বছরেও শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য নির্মিত ভবনটি চালু করা যায়নি। এ কারণে টার্মিনালে ট্রাক নিয়ে আসছেন না বেশির ভাগ চালক। সড়কেই পার্কিং করে রাখেন। এতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নগরবাসী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিক-শ্রমিকদের অনাগ্রহ ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ভবনটি চালু করা যায়নি। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় এটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মাণের পর থেকেই ভবনটি তালাবদ্ধ। ব্যবহার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক ভবনের গেটে ঝুলছে তালা। খসে পড়ছে পলেস্তারা। নষ্ট হচ্ছে দরজা-জানালা। একতলা, দোতলা ও তিনতলার মেঝেতে রাখা আসবাবপত্রেও জমেছে ধুলাবালি। তবে ভবনটি চালু না হলেও টার্মিনালের বড় একটি অংশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সোনাডাঙ্গা কাঁচাবাজার।

বাজারে সবজি নিয়ে আসা ট্রাকচালক আনোয়ার শেখ, সেলিম সরদার ও জামাল হোসেন জানান, কাঁচাবাজার এলাকায় নির্মিত ট্রাক টার্মিনাল ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ট্রাক পার্কিংয়ের জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি গর্তগুলোয় জমে আছে। চালক ও হেলপারদের বিশ্রাম নেয়ার ব্যবস্থা নেই এখানে। এ কারণে তারা টার্মিনালে আসতে চান না। বিভিন্ন সড়কে ট্রাক পার্কিং করে রাখেন। তাছাড়া ট্রান্সপোর্ট বা ট্রাক মালিকরা ফি দিয়ে টার্মিনালে গাড়ি রাখতে চান না।

খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে নগরের গল্লামারী-সোনাডাঙ্গা সড়কের পাশে ছয় একর জমির ওপর ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সিটি করপোরেশন। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ২০০২ সালে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ, সীমানাপ্রাচীর, লোড-আনলোড-সুবিধা, টিকিট কাউন্টার, নালা, গণশৌচাগার ও ৪৯টি দোকানঘর নির্মিত হয়। পরের বছর ২০০৩ সালে টার্মিনালটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আরো ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় তিন তলা প্রশাসনিক ভবন।

এ ব্যাপারে খুলনা সিটি করপোরেশনের এস্টেট অফিসার মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ট্রাক টার্মিনালটি বাণিজ্যিক এলাকা থেকে একটু দূরে হয়ে গেছে। এ কারণে জ্বালানি বাঁচাতে চালকরা আসছেন না। বেশির ভাগ চালক মালামাল আনলোড করে সড়কেই গাড়ি পার্কিং করেন। সড়কে গাড়ি পার্কিং রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযুক্ত ট্রাক চালকদের জরিমানাও করা হয়। কিন্তু এসব কোনো কাজে আসেনি।’

ট্রাক টার্মিনাল চালু না হওয়ার কারণ হিসেবে ট্রান্সপোর্ট, ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদেরও যথেষ্ট অবহেলা রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময়েও ভবনটি চালু না হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।’

তবে টার্মিনালে ট্রাক না রাখার বিষয়ে বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিকাংশ ট্রাক মালিক ফি দিয়ে টার্মিনালে গাড়ি রাখতে চায় না। এজন্য সড়ক বা গ্যারেজেই তারা গাড়ি রাখে। এটি মালিকদের বিষয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন