সার্ফশার্কের প্রতিবেদন

গুগল ও অ্যামাজনের স্মার্ট হোম ডিভাইসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড ডটকম

স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স অ্যাপের মাধ্যমে গুগল অ্যামাজনের মতো কোম্পানি ব্যবহারকারীর ডাটা সংগ্রহ করেছে। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ভিপিএন কোম্পানি সার্ফশার্কের নতুন বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে এমন অভিযোগ উঠে এসেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, সিকিউরিটি ক্যামেরা বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো চার শতাধিক স্মার্ট হোম ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত প্রায় ২৯০টি অ্যাপ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ধরনের অ্যাপ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসির বিরুদ্ধে বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। খবর টেকটাইমস।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ১০টি স্মার্ট হোম অ্যাপের মধ্যে অন্তত একটি ট্র্যাকিংয়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারীর ডাটা সংগ্রহ করছে। অ্যামাজন গুগলের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এসব অ্যাপের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত তথ্য ডাটা সংগ্রহ করছে। বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে ৩২ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য বা ডাটা পয়েন্টের ওপর নজর রাখা হয়েছিল, যা স্মার্ট হোম ডিভাইসগুলো সংগ্রহ করতে পারে। এসব ডিভাইসের মধ্যে অ্যামাজনের অ্যালেক্সা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সবচেয়ে বেশি ডাটা সংগ্রহ করেছে। আলেক্সা কোনো ব্যক্তির অবস্থান, তাদের ব্যক্তিগত বিবরণ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যও সংগ্রহ করেছে।

বিশ্লেষণে ৩২টি ডাটা পয়েন্টের মধ্যে ২২টি ডাটা পয়েন্ট সংগ্রহ করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গুগলের অ্যাসিস্ট্যান্ট। গুগলের সংগ্রহ করা এসব ডাটার মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে অতি সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব। এটি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা লঙ্ঘনের পাশাপাশি সাইবার হামলার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

এর আগেও দুই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রাইভেসি ইস্যু নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল। সম্প্রতি রিয়েল-টাইম কল মনিটরের মাধ্যমে ফাইন্যান্সিয়াল স্ক্যাম শনাক্তের উদ্যোগ নিয়েছে গুগল। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন ধরনের এআই সিস্টেম। একে গ্রাহকের ফোন কলে আড়িপাতা হিসেবে দেখছেন প্রাইভেসি অ্যাক্টিভিস্টরা। তারা এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন।

এদিকে গত বছর অ্যামাজনের রিং স্মার্ট ডোরবেলের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। অভিযোগের মধ্যে ছিল যথাযথ অনুমতি না নিয়ে এআই প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারকারীদের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ, চুক্তিতে ভিডিও ব্যবহারের অনুমতির বিষয়ে অস্পষ্টতা রাখা অপর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা। ফলে রিং কর্মীদের মাধ্যমে নজরদারি হয়রানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ইস্যুর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগের সঙ্গে রিংয়ের বিতর্কিত অংশীদারত্ব গ্রাহকের ডাটা সম্পর্কে উদ্বেগকে আরো বাড়িয়ে তুলেছিল।

সার্ফশার্কের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কীভাবে স্মার্ট হোম অ্যাপগুলো ডিফল্টভাবে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডাটা সংগ্রহ করতে পারে। গুগল অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলো এভাবে ব্যবহারকারীর কতটা সংবেদনশীল তথ্যে প্রবেশ করতে পারে এবং কীভাবে সেই ডাটার অপব্যবহার হতে পারে, তাও তদন্তের অধীনে রয়েছে।

বাজার দ্রুত সম্প্রসারণ হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বব্যাপী স্মার্ট ডিভাইসের চাহিদা বেড়েছে। পরিপ্রেক্ষিতে স্মার্ট হোম ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে। জরুরি ভার্চুয়াল মিটিং কিংবা ব্যস্ত শিডিউল ঠিক রাখার জন্য অনেকে নির্ভর করছে অ্যালেক্সা বা গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ওপর। সব মিলিয়ে স্মার্ট হোম ডিভাইসগুলো যে পরিমাণ ব্যক্তিগত ডাটা সংগ্রহ করতে পারে, তা গোপনীয়তা সুরক্ষা সম্পর্কে উদ্বেগও ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন