বৈশ্বিক প্রতিযোগী সক্ষমতা সূচকে শীর্ষস্থানে সিঙ্গাপুর

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

বৈশ্বিক প্রতিযোগী সক্ষমতা সূচকে আবারো শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে সিঙ্গাপুর। গত বছর তালিকার চতুর্থ স্থানে ছিল দেশটি। এ বছর তিন ধাপ এগিয়ে ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডকে পেছনে ফেলেছে এশিয়ার দেশটি। খবর দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্টের (আইএমডি) ওয়ার্ল্ড কম্পিটিটিভনেস র‍্যাংকিং প্রকাশ হয়। সেখানেই প্রতিযোগী সক্ষমতার দিক থেকে সিঙ্গাপুরের শীর্ষে উঠে  আসার তথ্য জানানো হয়।

আইএমডি বিশ্বের ৬৭ দেশের ৩৩৩টি প্রতিযোগিতামূলক মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে এ র‍্যাংকিং তৈরি করেছে।

২০২৩ সালে র‍্যাংকিংয়ের প্রথম স্থানে থাকা সুইজারল্যান্ড এবারে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে। তৃতীয় স্থানে আছে ডেনমার্ক। অন্যদিকে, গত বছর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আয়ারল্যান্ড এ বছর চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে।

সিঙ্গাপুর ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষেস্থান দখল করেছিল। পরের তিন বছর যথাক্রমে পঞ্চম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে অবস্থান করে। এ সময়ে ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ড ভাগাভাগি করে সূচকের শীর্ষস্থানে ছিল। অবশেষে ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ডের জায়গায় দখলে নিতে পেরেছে দেশটি। সিঙ্গাপুরের শীর্ষে উঠে আসার বিষয়টি তাদের সক্ষমতার জানান দিচ্ছে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স, শাসন দক্ষতা, বাণিজ্য দক্ষতা ও অবকাঠামো—চার মানদণ্ডে উন্নতি করেছে দেশটি।

এর মধ্যে বাণিজ্য দক্ষতায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় শীর্ষে উঠে এসেছে দেশটি। গত এক বছরে মানদণ্ডটির অন্তর্গত উপাদান শ্রমবাজারের ক্ষেত্রে তিন ধাপ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ১২ ধাপ উন্নতি হয়েছে। এছাড়া ব্যবস্থাপনা অনুশীলনে ২১ ধাপ উন্নতির মাধ্যমে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটি।

একইভাবে প্রযুক্তিগত অবকাঠামো সূচকেও শীর্ষে অবস্থান করছে সিঙ্গাপুর। সার্বিক অবকাঠামো ক্যাটাগরিতে গত বছর নবম স্থানে থাকলেও এ বছর চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। শাসন দক্ষতায় পাঁচ ধাপ উন্নতি করে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটি।

তবে অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে কিছুটা স্থবিরতা দেখিয়েছে সিঙ্গাপুর। মূল্যসূচকে ১১ ধাপ অবনমনে ৬২তম ও কর্মসংস্থান সূচকে তিন ধাপ অবনমনে পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে দেশটি। সার্বিকভাবে তৃতীয় অবস্থানে আছে দেশটি।

ইসেক বিজনেস স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক জামুস লিম বলেন, ‘দক্ষ শাসন ও সহজে ব্যবসা শুরু করার সুবিধা এবং বিশ্বমানের অবকাঠামোই সিঙ্গাপুরের অন্তর্নিহিত শক্তি। এগুলোই এ দেশের অর্থনীতিকে গতি প্রদান করছে।’

জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়কে ‘শঙ্কা’ করে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ৬৭টি দেশের মধ্যে ৬২তম স্থানে অবস্থান করছে। এছাড়া ভাড়া, পরিবহন ব্যয়, ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের কমপেনসেশন ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যয়ে সিঙ্গাপুরের দুর্বলতা আছে।’

জামুস লিম বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা শুধু নীতিনির্ধারকদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে তা নয়। বরং দেশের অর্থনীতির ওপর জনগণের আস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে।’

এ প্রসঙ্গে এনইউএস বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক লরেন্স লোহ বলেন, ‘‌সিঙ্গাপুরের মতো কম জমির দেশে এটি হতেই পারে। এটি অর্থনৈতিক উন্নতির পথে একটি মাত্র প্রতিবন্ধকতা। এশিয়ার অন্য অর্থনীতিগুলো ক্রমাগত উন্নতি করছে এবং সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পথকে আরো সংকীর্ণ করে তুলছে। তাই আইএমডি সূচকে শীর্ষস্থানে উঠেই ক্ষান্ত হওয়া উচিত হবে না।’

আইএমডি চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বিশ্বের ৬৭টি দেশের ৬ হাজার ৬০০ সি-সুইট এক্সিকিউটিভ এবং মধ্যম সারির ব্যবস্থাপকদের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করে। এছাড়া ১৬৪টি পারিসংখ্যানিক উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতা সূচক তৈরি করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন