দেশের বাজারে মসলাপণ্যের দামে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক মাস ধরে মসলাসহ সব ধরনের পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

কোরবানি ঈদ ঘিরে দেশের বাজারগুলোয় মসলাপণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার কারণে গোলমরিচ, এলাচ, সরিষা, হলুদসহ বেশকিছু মসলাপণ্যের দাম বেড়েছে। গতকাল দেশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। 

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক মাস ধরে মসলাসহ সব ধরনের পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। 

পাইকারি ও ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গোলমরিচের দাম কেজিতে ৯০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯৩০-৯৪০ টাকায়। সাদা গোলমরিচের দাম কেজিতে ১১০-১২০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি সাদা গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৩০ টাকায়। 

এলাচের দাম (সাধারণ মানের) কেজিতে ২০০-৪০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারচিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৩৯০ টাকায়। জিরার দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে ৮০০-৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জয়ত্রির দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি জয়ত্রি ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কালিজিরা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে ৩৩০-৩৪০ টাকা, তেজপাতা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

দেশের বাজারে সরিষার দামও কেজিতে ৭-৮ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ টাকায়। দেশী হলুদের দাম কেজিতে ৩৫-৪০ টাকা বেড়ে ২৫০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানীকৃত হলুদের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৭০-২৮০ টাকায় এবং মিষ্টি জিরার দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা বেড়েছে। ভালো মানের এলাচ কেজিতে ৩ হাজার ১০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। এক মাস আগেও যার দাম ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকা। 

কোরবানির ঈদের আগে দেশে উৎপাদিত মসলার চেয়ে চলতি বছর আমদানীকৃত মসলাপণ্যের দামই সবচেয়ে বেশি বাড়ছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পর আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজার থেকে সংগ্রহ করা পণ্যের দাম বেড়েছে। এছাড়া গত বছর দেশে আমদানি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মসলাপণ্যের আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর কারণেও দেশের বাজারে মসলাপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ডলারের মূল্য প্রায় সাড়ে ৭ টাকা বাড়িয়েছে। এসব কারণে আমদানীকৃত মসলার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ছে। 

অন্যান্য মসলাপণ্যের দাম বাড়লেও মেথি ও শুকনা মরিচের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মেথি ১২০ টাকায় ও শুকনা মরিচ মানভেদে ২১৫-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানীকৃত ভারতীয় শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩০৫-৩১০ টাকায়। 

বাংলাদেশে উৎপাদন হওয়া মসলাপণ্যের মধ্যে রয়েছে শুকনা মরিচ, হলুদ, মিষ্টি জিরা, কালিজিরা, মেথি, তেজপাতা, ধনিয়া, সরিষা। তবে বাড়তি চাহিদার কারণে মরিচ, হলুদ, কালিজিরা, মেথি, ধনিয়া, সরিষা আমদানি করতে হয়। শতভাগ আমদানি হওয়া মসলার মধ্যে রয়েছে জিরা, লবঙ্গ, দারচিনি, গোলমরিচ, জায়ফল, জয়ত্রি, রাঁধুনি, এলাচ। ভারত, শ্রীলংকা, চীন, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মাদাগাস্কার, গুয়েতেমালা, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসব মসলাপণ্য আমদানি হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন