মে মাসে পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ভারতে

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ ভারতের ভাল্লারপদম বন্দর ছবি: রয়টার্স

২০২৩-২৪ অর্থবছরে শীর্ষ দশ বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে নয়টির সঙ্গে ঘাটতিতে ছিল ভারত। চলতি অর্থবছরের শুরুতেও এ প্রবণতা চলমান রয়েছে। মে মাসে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৭৮ কোটি ডলার। যদিও এর আগে বিশেষজ্ঞরা ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার ঘাটতির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। খবর দ্য ওয়ার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের (ভারতে অর্থবছর হিসাব হয় এপ্রিল-মার্চ সময়সীমায়) শেষ মাস মার্চে বাণিজ্য ঘাটতি ১ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারে সংকুচিত হয়েছিল, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও এর দুই মাসের ব্যবধানে ঘাটতির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। 

পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ৯ শতাংশ, এর পরিমাণ ৩ হাজার ৮১৩ কোটি ডলার। রফতানি বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, বাণিজ্যিক যানবাহন ও স্মার্টফোন। মে মাসে এসব পণ্যের চালান বেড়েছে। এছাড়া ইলেকট্রনিকস, ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল ও প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন খাতে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

মে মাসে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় বিদেশে তৈরি পণ্যের আমদানি বেড়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ বাবদ ভারতের খরচ হয়েছে ৬ হাজার ১৯১ কোটি ডলার।

মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ভারতে তৈরি পণ্যের রফতানি ৩ দশমিক ১ কমে আয় দাঁড়িয়েছিল ৪৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য পুনরুদ্ধারের ধারাই ভারতের রফতানির গতি বাড়াবে। এক্ষেত্রে উৎপাদন ও অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতি হ্রাসে সরকারি প্রণোদনা ভূমিকা পালন করতে পারে।

মে মাসে ভারতের জ্বালানি তেল আমদানি ২৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় খরচ হয়েছে ২ হাজার কোটি ডলারের বেশি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুর দুই মাসে আমদানি ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার হয়েছে।

মে মাসের পরিসংখ্যান প্রকাশকালে রফতানি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন বাণিজ্য সচিব সুনীল ভারতওয়াল। তিনি বলেন, ‘উন্নত অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে, যা ভোক্তা চাহিদা বাড়িয়ে তুলছে। এ কারণে ভারত থেকে দেশগুলোয় আমদানি বেড়েছে।’

গত সপ্তাহে প্রকাশিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে পরিষেবা রফতানি বাবদ আনুমানিক আয় ছিল ৩ হাজার ১৬ কোটি ডলার, যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলার। মে মাসে পরিষেবা আমদানিতে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৭২৮ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ বাবদ খরচ হয়েছিল ১ হাজার ৫৮৮ কোটি ডলার।

মে মাসে ভারতের শীর্ষ পাঁচ রফতানি গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র। আমদানির দিক থেকে শীর্ষে ছিল অ্যাঙ্গোলা, ইরাক, ইউএই, ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়া।

এদিকে গত মাসে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চীন, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, কোরিয়াসহ শীর্ষ ১০টি বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে নয়টির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড করেছে ভারত। চীন, রাশিয়া, কোরিয়া ও হংকংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে আরো বেড়েছে। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ইরাকের সঙ্গে ব্যবধান সংকুচিত হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অল্প কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি ডলার। এ তালিকায় আরো রয়েছে যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, ইতালি, ফ্রান্স ও বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন