ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I ফরিদপুর

ফরিদপুরের কানাইপুরে গতকাল মুখোমুখি সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত বাস ও পিকআপ ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে তেঁতুলতলা এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। হতাহত অধিকাংশের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলায়। নিহতদের চারজন একই পরিবারের সদস্য। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোর্শেদ আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানান, ইউনিক পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা যাচ্ছিল। অন্যদিকে আলফাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা পিকআপটি যাচ্ছিল ঢাকার দিকে। সকাল ৮টার দিকে তেঁতুলতলা এলাকায় দুই যানের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আটজন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহত ১৪ জনই পিকআপের যাত্রী ছিল। মো. মোর্শেদ আলমের ধারণা, বেপরোয়া গতির কারণেই এত প্রাণহানি হয়েছে। 

আহত পাঁচজন ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাস জানান, আহত এক নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক, বাকিরা আশঙ্কামুক্ত।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার জানান, নিহতদের দাফনে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। পরে নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেয়া হবে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের সদস্য। তারা হলেন বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বেজিডাঙ্গা গ্রামের রফিক মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমী বেগম (২৩) এবং দুই ছেলে রুহান মোল্লা (৬) ও হাবিব মোল্লা (৩)। নিহত বাকি ১০ জন হলেন বোয়ালমারীর মর্জিনা বেগম (৭৩), আলফাডাঙ্গার তবিবুর খান (৫৫), নজরুল ইসলাম (৩৫), জাহানারা বেগম (৪৫), সোনিয়া বেগম (২৮), নুরানী (২), কহিনূর বেগম (৬০), শুকুরুন্নেছা (৭০), সূর্য বেগম (৪০) ও ইকবাল শেখ (২৫)।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নথি অনুযায়ী, ইউনিক পরিবহনের বাসটির ফিটনেসের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরের বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল রুট পারমিট। অন্যদিকে কাগজপত্র ঠিক থাকলেও বেআইনিভাবে যাত্রী পরিবহন করছিল পিকআপটি।

পৃথক ঘটনায় ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার বড় কুমারদিয়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মা ও ছেলে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন বাবা ও মেয়ে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সুমাইয়া আক্তার (৩৫) ও তার আট মাস বয়সী শিশুপুত্র মোহাম্মদ মীর যশোরের লাউনিয়ার সিদ্ধিরপাশা গ্রামের আজমিন মিয়ার (৪৫) স্ত্রী ও সন্তান। দুর্ঘটনায় আজমিন ও মেয়ে ফাতেমা আক্তার (২) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. খাইরুল আনাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, তারাকান্দা উপজেলায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে গতকাল দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত ২৫ জন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কোদলধর এলাকায় শেরপুর-ময়মনসিংহ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। তারাকান্দা থানার ওসি ওয়াজেদ আলী জানান, শেরপুর ও ঢাকাগামী বাস দুটি সংঘর্ষের পর খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন বাসের হেলপার শহীদুল ইসলাম ও যাত্রী চৈতি আক্তার। দুজনই শেরপুরের বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, নগরের পতেঙ্গা আউটার রিং রোড এলাকায় সড়ক বিভাজকের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা লেগে এক বিদেশী নারী শিক্ষার্থী নিহত হন। সোমবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম ফুতফাফোনে জায়ডালা (২৩)। তিনি লাওসের নাগরিক, পড়তেন চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন