চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনায় ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানি তেলের বাজার

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীনে জ্বালানিটির চাহিদা লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়ছে। তার ওপর মধ্যপ্রাচ্য ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তাপ জ্বালানিটির সরবরাহকে আরো বেশি সংকোচনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এর প্রভাবে গতকালও বিশ্ববাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। খবর অয়েলপ্রাইস ডটকম।

আইসিই ফিউচারস ইউরোপে জুনে সরবরাহ চুক্তিতে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট দিনের শুরুতে প্রতি ব্যারেল লেনদেন হয়েছে ৯০ ডলার ৩০ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ২০ সেন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম দিনের শুরুতে ব্যারেলপ্রতি ৮৫ ডলার ৬২ সেন্টে ছিল, যা আগের দিনের তুলনায় ২১ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

তথ্য বলছে, সম্প্রতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুতগতিতে প্রসার ঘটছে চীনের অর্থনীতিতে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এক দফা বাড়ে। কারণ চীনে ইতিবাচক অর্থনীতির মানে হলো সেখানে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা ও আমদানি বাড়বে। তবে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ, খুচরা বিক্রি ও শিল্প খাতের উৎপাদনসহ বেশকিছু বিষয় চাহিদা বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম গত সপ্তাহে বেড়ে প্রায় ছয় মাসের সর্বোচ্চে উঠে গিয়েছিল। তবে গত সোমবার তা কমে যায়। কারণ ইসরায়েলে ইরানের হামলায় যতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। ফলে সংঘাতের তীব্রতা নিয়েও উদ্বেগ কিছুটা কম ছিল। তবে ইসরায়েল এ হামলার জবাব দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় সেকেন্ডের মধ্যে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতে ফের তীব্রতার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের অন্যতম বৃহৎ সদস্যদেশ ইরান। দেশটি প্রতিদিন ৩০ লাখ ব্যারেলেরও বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোয় দেশটির উত্তোলন ও রফতানি, দুটোই ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

বিশ্ববাজারে দাম বাড়াতে গত বছর কয়েক দফায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রফতানি কমিয়েছে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। ফলে জ্বালানিটির বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিষয়টিও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে প্রভাব রাখছে।

ওপেকের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সদস্যদেশগুলো সম্মিলিতভাবে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন কমাচ্ছে। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও (এপ্রিল-জুন) উত্তোলন কমানোর এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন