যুক্তরাজ্যে আবহাওয়াজনিত বীমা দাবি বৃদ্ধিতে রেকর্ড

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি ছবি: এপি

সারা বিশ্বেই ঠাণ্ডা-গরম ও ঝড়-বৃষ্টির গতিপ্রকৃতি অস্বাভাবিক রূপ নিয়েছে। এজন্য উষ্ণায়ন ও অন্যান্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতকে সামনে আনা হচ্ছে। এসব ঘটনায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি। ঝড় ও ভারি বৃষ্টির কারণে যুক্তরাজ্যে আবহাওয়াজনিত গৃহবীমা দাবি এক বছর আগের তুলনায় ২০২৩ সালে এক-তৃতীয়াংশের বেশি বেড়েছে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ বাবদ খরচ বৃদ্ধির হারও ছিল রেকর্ড পরিমাণ। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটিশ ইন্স্যুরার্সের (এবিআই) প্রতিবেদন অনুসারে, বীমা শিল্পে গত বছর গ্রাহককে পরিশোধ করা হয়েছে রেকর্ড ৫৭ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড।

২০২৩ সালে ঝড়ের ক্ষতি ও অন্যান্য চরম আবহাওয়ার জন্য গৃহ মেরামত বাবদ বীমা কোম্পানিগুলো আগের বছরের তুলনায় ১৫ কোটি পাউন্ড বেশি খরচ করেছে, যা সামগ্রিকভাবে আবাসিক সম্পত্তির বীমা দাবি ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।

গত বছর যুক্তরাজ্যের বাবেত, সিয়ারান ও ডেবিসহ কয়েকটি অঞ্চল একের পর এক ঝড়ের কবলে পড়ে। আবহাওয়ার বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িঘর। এর মধ্যে যেমন বন্যার ক্ষয়ক্ষতি রয়েছে, তেমনি ২০২৩ সালের শীতের শুরুতে হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় পাইপ ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এ বাবদ বীমা দাবির পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড।

এছাড়া বীমা দাবির ক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে অর্থের পরিমাণও বেড়েছে। ২০২২ সালে যেখানে আবহাওয়াজনিত বীমার দাবিতে গড় খরচ ছিল ৩ হাজার পাউন্ড। পরের বছরে তা ৫ হাজার পাউন্ডের কাছাকাছি পৌঁছে।

এবিআই জানিয়েছে, বীমার দাবির এ পরিসংখ্যানকে ২০১৭ সালের ডাটার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। সঙ্গে যোগ করা হয়েছে বর্তমান মূল্যস্ফীতিকে। তবে অতীতের কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে তুলনা করা হলেও এ ক্ষতির হিসাব অন্য রকম হতে পারত। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৫-১৬ সালের শীতকালীন বন্যা ও ২০০৭ সালের গ্রীষ্মকালীন বন্যা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রমাগত আর্দ্র আবহাওয়া ও শীতকালীন ঝড়ের ধারাবাহিকতায় আবহাওয়ার এ প্রবণতা ২০২৪ সালে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অনুমান করা হচ্ছে, শুধু জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আঘাত হানা হেঙ্ক ঝড়ের কারণে ১৫ কোটি পাউন্ড বীমা দাবি আসতে পারে। ওই মাসটি ২৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে আর্দ্র হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে উষ্ণ ফেব্রুয়ারির কারণে পাইপ ফেটে যাওয়া জনিত দাবি কমে যেতে পারে।

এবিআইর উপদেষ্টা লুইস ক্লার্ক বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তন এখন স্বাভাবিক। এ কারণে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো এখন আর বিরল নয়।’

তিনি জানান, চরম আকার ধারণ করা শরৎ ও শীতের জন্য অর্থছাড় বর্তমানে সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন