যুক্তরাষ্ট্রে চীনের তৈরি ইভি নিষিদ্ধের আহ্বান

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মাঝে চলমান প্রযুক্তি যুদ্ধে বড় অনুঘটক হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি)। সম্প্রতি চীনে তৈরি ইভি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটর শেরড ব্রাউন। তিনি বলেন, ‘চীনের তৈরি ইভি আমেরিকান অটো ইন্ডাস্ট্রির অস্তিত্বের জন্য হুমকি।’ খবর বিবিসি।

মার্কিন বাজারে চীনের ইভির ওপর কড়া শুল্ক আরোপ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেছিলেন অন্য আইনপ্রণেতারা। এর মধ্যে সবচেয়ে কড়া প্রতিক্রিয়াটি জানিয়েছেন সিনেটের ব্যাংকিং কমিটির প্রধান শেরড ব্রাউন।

চীনা প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এ সিনেটর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অটো ইন্ডাস্ট্রির ওপর চীন সরকার সমর্থিত প্রতারণাকে আমরা অনুমতি দিতে পারি না।’

এর আগে হোয়াইট হাউজ ফেব্রুয়ারিতে বলেছিল, চীনা গাড়িগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে কিনা এ বিষয়ে দেশটি তদন্ত শুরু করেছে। তবে সাম্প্রতিক মন্তব্য বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি হোয়াইট হাউজ।

ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘চীনের নীতি হলো যানবাহনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার দখল করে নেয়া, এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলবে। আমরা সেটি হতে দেব না।’

হোয়াইট হাউজ আরো জানিয়েছে, চীনের কার প্রযুক্তি চালক ও যাত্রীদের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তাই তারা এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।

ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত এসব গাড়ি সার্বক্ষণিক ক্যামেরা ও সেন্সর ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের অবকাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রেকর্ড করতে পারে বলে দেশটি সতর্ক করেছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর সঙ্গে সরাসরি মিথস্ক্রিয়া করে সেগুলো পরিচালনা কিংবা অচল করেও দিতে পারে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার উৎপাদনকারী দেশ চীন। বর্তমানে সবচেয়ে বড় কার রফতানিকারক হতে জাপানের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে দেশটি। তবে যানবাহনের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ ট্যারিফ থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সড়কে চীনা কারের সংখ্যা খুবই নগণ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন সম্প্রতি চীন সফরকালে সতর্ক করেছেন যে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের মতো ‘চীনা শক’-এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেবে না ওয়াশিংটন। ওই সময়ে মার্কিন বাজার চীনা পণ্যে ছেয়ে গিয়েছিল। জবাবে চীনের উপ-অর্থমন্ত্রী লাইও মিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

এর মাঝে ১১ এপ্রিল বাইডেন প্রশাসনকে সবচেয়ে বড় মার্কিন এয়ারলাইনস কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন ফ্লাইট অনুমোদন না দেয়ার অনুরোধ করেছে।

২০১৮ সালে তৎকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যে ৩৬ হাজার কোটি ডলারের বেশি শুল্ক আরোপ করার পর থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ দুটি বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত হয়। বেইজিং মার্কিন পণ্যে থেকে ১১ হাজার কোটি ডলার শুল্ক নিয়ে এর জবাব দেয়। শুল্ক বিষয়ে সে পুরনো ব্যবস্থায় বহাল রেখেছেন বাইডেন।

গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেনা পণ্যের মূল্য ২০ শতাংশ কমে ৪২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে নেমেছে। একই সময়ে চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি ৪ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন