মিরসরাইয়ে সাত বধ্যভূমির ছয়টিই অরক্ষিত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I মিরসরাই

ছবি : বণিক বার্তা

একাত্তরের এপ্রিলের এক সকালে জোরারগঞ্জের দক্ষিণ তাজপুর গ্রামের কৃষক জান মিয়া মাছ ধরতে বের হন। এরপর আর ফিরে আসেননি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজ নিতে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ি থেকে একটু সামনে এগোতেই জানতে পারেন পাকিস্তানি সেনারা জান মিয়াকে গুলি করে হত্যার পর ছুটি খাঁ দিঘির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মরদেহ ফেলে গেছে।

শুধু জান মিয়া নন, পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যার শিকার হয়েছেন অসংখ্য বাঙালি। গণহত্যার এসব স্থান বধ্যভূমি নামে পরিচিত। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়েও রয়েছে এমন সাতটি বধ্যভূমি। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। বাকিগুলো এখনো অরক্ষিত রয়েছে। দীর্ঘ বছরে বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষিত না হওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শুভপুর ব্রিজ, হিঙ্গুলী ব্রিজ, ছুঁটি খাঁ দিঘি, মস্তাননগর হাসপাতাল, ঝুলনপুল, লোহারপুল ও তালবাড়িয়া বধ্যভূমি রয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক, গনি আহম্মদ, এসএম কামাল উদ্দীন, রফিক আহম্মেদ ও মাহবুবুল হক জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ বিকালে পাকিস্তানি বাহিনী মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে প্রবেশ করে। ২৭-২৮ মার্চ হত্যাযজ্ঞ চালায়। হত্যার পর মরদেহ জোরারগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে ছুটি খাঁ দিঘির দক্ষিণ-পূর্ব কোণ বেছে নেয়। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা ২৭ মার্চ থেকে চট্টগ্রাম মুক্ত হওয়া পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন গণহত্যা চালায়।

মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির আহম্মদ বলেন, ‘মিরসরাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত সাতটি বধ্যভূমি রয়েছে। তালবাড়িয়ায় বধ্যভূমি সংরক্ষণ ছাড়া অন্য কোনো গণকবর সংরক্ষণ করা যায়নি। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা পরিষদে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন