২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিক

স্যামসাংয়ের আয় ১৪ বছরের সর্বনিম্নে

বণিক বার্তা ডেস্ক

সিইএস সম্মেলনে স্যামসাংয়ের স্টল ছবি: সিএনবিসি

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকের আয় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাং। প্রতিবেদন অনুযায়ী এ আয় প্রতিষ্ঠানটির ১৪ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্নে। মূলত গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা কমে যাওয়া ও চিপের মূল্য হ্রাসের কারণে আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। খবর রয়টার্স ও দ্য কোরিয়া হেরাল্ড।

প্রথম প্রান্তিকে এ প্রযুক্তি জায়ান্ট ৩৪০ কোটি ডলার লোকসানে পড়েছে। তবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে কোম্পানিটি। কেননা এ প্রান্তিক থেকেই উৎপাদন কমার যে নেতিবাচক প্রভাব তা কমতে শুরু করবে। মূলত বিশ্বের অন্যতম এ মেমোরি চিপ ও স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি উন্নত প্রক্রিয়ায় বেশি দামের পণ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সংরক্ষণে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।

প্রথম প্রান্তিকের আয়-ব্যয় প্রতিবেদন প্রকাশের সময় মেমোরি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বিভাগের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কিম জায়ে জুন বলেন, ‘‌আমরা মেমোরি উৎপাদন কার্যক্রম কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের আশা কার্যক্রম কমানোর হার প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থবহ হয়ে উঠবে।’

চলতি মাসের শুরুতে দেয়া এক বিবৃতিতে স্যামসাং জানিয়েছিল, প্রতিষ্ঠানটি মেমোরি চিপ উৎপাদন কমানোর কথা জানিয়েছিল। যেখানে আগে উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। সে সময় অন্য প্রতিযোগীরা ব্যবসার বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য উৎপাদন ও বিনিয়োগ কমানোর কথা জানিয়েছিল। ১৯৯৮ সালের পর স্যামসাং প্রথমবারের মতো উৎপাদন কমানোর বিষয়টি প্রকাশ করে।

চিপ বিভাগের প্রধান জানান, উৎপাদন কমানো হলেও মিড থেকে লং টার্মে গ্রাহকদের চাহিদা মেটানোর জন্য কোম্পানিটি পর্যাপ্ত পণ্য মজুদ রেখেছে। বাজার তদারককারীদের বিশ্বাস, মূলত গেয়ংগি প্রদেশের হাওয়াসেং এ প্রযুক্তি জায়ান্টটির যে কারখানা রয়েছে সেখানেই মূলত উৎপাদন কমানো হবে। এ কারখানায় স্যামসাং সাধারণ পণ্য তৈরি করে থাকে।

রেগুলেটরি ফাইলিংয়ে স্যামসাং চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পরিচালন মুনাফার কথা জানিয়েছে। এ প্রান্তিকে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে ৬৪ হাজার ২০ কোটি ওন বা ৪৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০০৯ সালের প্রথম প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১ ট্রিলিয়ন ওন। সে সময় মুনাফাই হয়েছিল ৫৯ হাজার কোটি ওন।

প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রি ১৮ দশমিক ১ শতাংশ কমে ৬৯ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়রে নেমে আসে। অন্যদিকে গড় আয় ছিল ১ দশমিক ৫৭ ট্রিলিয়ন ওন। যা আগের বছরের তুলনায় ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ কম। অন্যদিকে স্যামসাংয়ের ডিভাইস সলিউশন ইউনিট বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে ৪ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ওন ঘাটতির মুখে পড়েছে। মূলত গ্রাহক পর্যায়ে ডিভাইসের ব্যবহার কমার পাশাপাশি উৎপাদনকারী পর্যায়ে চিপ ক্রয় কমে যাওয়ার কারণে আয়ে এ বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছে্ এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।

এক পূর্বাভাসে স্যামসাং জানায়, চলতি বছর চিপের বৈশ্বিক বাজার ৬ শতাংশ সংকুচিত হয়ে ৫৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে সীমাবদ্ধ থাকবে। এ খাতের সংকটাবস্থাও পুরো বছরজুড়ে চলমান থাকবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও বিক্রি বাড়াতে কোম্পানিটি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জনে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে বলে সূত্রে জানা গেছে। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতও এর অন্তর্গত। শুধু প্রথম প্রান্তিকেই কোম্পানিটি ১০ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ওন মূলধন বিনিয়োগ করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন