শীত পড়তেই যুক্তরাজ্যে বাড়ছে ভোগ ব্যয়

বণিক বার্তা ডেস্ক

লন্ডনের টেসকো এক্সট্রা সুপারমার্কেট ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যে চলতি বছর শীতের শুরুতেই বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। ফলে শীতের কাপড় কেনার প্রয়োজন হচ্ছে। দরকার পড়ছে গরম পানি রাখার বোতল হুডিযুক্ত কম্বল। একই সময়ে বছর ঘুরে এসেছে ব্ল্যাক ফ্রাইডের কেনাকাটার মৌসুম। মূল্যছাড়ের সুযোগ নিয়ে ভোক্তারা কেনাকাটা বাড়িয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে নভেম্বরে বিক্রি বেড়েছে দেশটির খুচরা বিক্রেতাদের। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) বলছে, গত বছর নভেম্বরের তুলনায় চলতি নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে খুচরা বিক্রি বেড়েছে দশমিক শতাংশ, যা অক্টোবরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি। পরিসংখ্যান শুধু হাই স্ট্রিট অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার। অক্টোবরের সঙ্গে তুলনা করলে গত মাসে বিক্রি অনেক বেড়েছে। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবনযাপনে পরিবর্তন হওয়ার কারণে ধারণা করা হয়েছিল ভোক্তা ব্যয় কমবে। যদিও বিআরসি সতর্ক করে বলছে যে উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রীত পণ্যের দাম বাড়লেও আদতে বিক্রির পরিমাণ কম হয়েছে।

বিআরসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেন ডিকিনসন বলেন, ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের কারণে মোট বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে উৎসবের মৌসুম শুরু হয়েছে। যদিও বর্তমান মূল্যস্ফীতির হিসেবে বিক্রির প্রবৃদ্ধি এখনো অনেক নিচেই রয়েছে।

বার্কলেকার্ডের আরেকটি পরিসংখ্যান বলছে, চলতি মৌসুমে এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি মানুষ বাড়ি উষ্ণ রাখার যন্ত্র ব্যবহার শুরু করেছেন। ফলে ইউটিলিটি খাতে ব্যয় অক্টোবরের ৩৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক শতাংশে। পাশাপাশি টেকঅ্যাওয়ে ডিসকাউন্ট স্টোরগুলোতেও খরচের পরিমাণ বাড়িয়েছেন ভোক্তারা।

সংস্থাটির দেয়া তথ্য বলছে, ব্যক্তিগত অর্থনীতিকে ইউটিলিটিসহ পারিবারিক ব্যয় কতটা প্রভাব ফেলছে সে সম্পর্কে এখন আগের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ভোক্তারা। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের তুলনায় এবার লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। তবে ব্যয় প্রথাগত বড়দিনের কেনাকাটার মতো নয়।

প্রায় দুই হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর বিষয়ে একটি জরিপ চালানো হয়। সেখানে দেখা যায়, অর্ধেকেরই বেশি বলছেন, বছর খরচ কমাবেন তারা। ৫৭ শতাংশ বলছেন এবার উপহার বাবদ বাজেট কাটছাঁট করবেন। ৪৫ শতাংশ বলছেন উৎসব-সংক্রান্ত কার্যক্রম সামাজিকতার ব্যয় কমাবেন তারা। এমন সময়ে জরিপের তথ্য পাওয়া গিয়েছে যখন মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশের বেশি এবং পরিবারগুলোর বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের ব্যয় অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। এছাড়া ১৯৭৭ সালের পর খাদ্য অ্যালকোহল-বহির্ভূত পানীয়ের মূল্যস্ফীতিও পৌঁছেছে সর্বোচ্চে। অর্থনীতিবিদরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন যে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় ভোক্তাদের খরচ কমাতে বাধ্য করবে, যা অর্থনীতিকে মন্দায় ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, খেলনা, কম্পিউটার সামগ্রী শিশুদের উপযোগী সামগ্রীর বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। কয়েক মাস ধরেই কমছিল; উৎসবের মৌসুমেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন