কাতার বিশ্বকাপে তিউনিশিয়ার কাছে হেরেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। গতকাল আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে তিউনিশিয়া জিতেছে ১-০ গোলে। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে ওয়াহাব খাজরি আফ্রিকান দলটির হয়ে গোল করেন। যদিও আরব দেশটি নকআউটে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় তার গোলটি বিফলেই যায়। গতকাল আল জানুব স্টেডিয়ামে ডেনমার্ককে ১-০ গোলে হারিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউটের টিকিট পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার কৃতিত্ব দেখাল সকারুরা।
ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলেরই সংগ্রহ সমান ৬ পয়েন্ট। তবে গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের গোল গড় (+৩), অস্ট্রেলিয়ার (-১)। ফ্রান্সের কাছে ১-৪ গোলে না হারলে হয়তো গ্রুপের সমীকরণ অন্যরকমই হতে পারত।
আগামী রোববার শেষ ষোলোয় ফ্রান্স খেলবে ‘সি’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের বিপক্ষে, আর শনিবার অস্ট্রেলিয়া খেলবে একই গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের বিপক্ষে।
গতকাল যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে গোল করে সমতা এনেছিলেন ফ্রান্সের বদলি খেলোয়াড় আতোয়াঁ গ্রিজম্যান। যদিও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করে দেন ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি। তাতে পরাজয়ের তেতো স্বাদ পায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
ফরাসিরা ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পথে গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতেছিল। এর পর কখনই আর পারেনি। এবার দিদিয়ের দেশমের দলের সামনে তৃতীয় জয় তুলে নেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু পারল না। পারেনি নিজেদের ভুলে।
ব্লুজরা টানা দুই জয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করায় গতকাল শেষ ম্যাচে কোচ দিদিয়ের দেশম একাদশ নির্বাচনে বিলাসিতা দেখান। তিনি বিশ্রাম দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, আতোয়াঁ গ্রিজম্যান ও অধিনায়ক উগো লরিসসহ মূল একাদশের অধিকাংশ খেলোয়াড়কে। সিদ্ধান্তটি ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে।
অবশ্য ফ্রান্সকে হারের লজ্জা দিয়েও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তিউনিশিয়াকে। উল্লেখ্য, আগে পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলে কখনই গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি তিউনিশিয়া। এবার দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত পারল না তারা। বিশ্বকাপে গতকাল তারা তুলে নেয় তৃতীয় জয়। এর আগে ১৯৭৮ সালের জয়টি আসে মেক্সিকোর বিপক্ষে, ২০১৮ সালে তিউনিশরা হারায় পানামাকে। কাতারে এর আগে ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করার পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে ০-১ গোলে হেরে যায় কার্থেজের ঈগলরা।
এদিকে, ১৬ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উঠল অস্ট্রেলিয়া, যারা এবার মহাদেশীয় প্লে-অফে পেরুকে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট পায়। নকআউটে যেতে জিততে হতো ড্যানিশদের। এ মিশনে তারা বল দখলেও এগিয়ে ছিল। যদিও ৬০ মিনিটে ম্যাথিউ লেকি গোল করে বসেন। অস্ট্রেলিয়ার বক্সে ড্যানিশরা বল হারানোর পর কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে মাটি কামড়ানো শটে গোলকিপার ক্যাসপার স্মাইকেলকে পরাস্ত করেন লেকি। এ গোলটিই অস্ট্রেলিয়াকে তুলে দেয় কাতার বিশ্বকাপের নকআউটে। এর আগে ২০০৬ বিশ্বকাপে শেষ ষোলোয় খেলেছিল সকারুরা।