বিশ্বশান্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা বিশ্বের মানুষের জীবনে শান্তি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকালে ইউএনজিএর ৭৭তম অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন।

গতকাল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে আব্দুল মোমেন কথা জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বহুপাক্ষিকতার ওপর জোর দেবেন। আমরা শান্তির প্রতি জোর দেব, আমরা বলব, যেকোনো ধরনের সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার সর্বোত্তম উপায় হলো সংলাপ শান্তিপূর্ণ সমাধান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বিষয়টিও উল্লেখ করবেন যে বাংলাদেশ কভিড-১৯ মহামারীকে খুব ভালোভাবে মোকাবেলা করেছে এবং মহামারী মোকাবেলায় বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। মহামারী সত্ত্বেও বাংলাদেশ যথেষ্ট অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে এবং তা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তা তুলে ধরবেন। এছাড়া আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ এবং প্রণোদনা দিয়েছি, আমরা সেগুলোও সেখানে তুলে ধরব।

কে আব্দুল মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে জলবায়ু সমস্যাও তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলি যে আমাদের বিশ্বকে বাঁচাতে হবে এবং বিশ্বকে বাঁচাতে যে জিনিসটি প্রয়োজন, তা হলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা অবশ্যই দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হওয়া উচিত নয়। আমরা প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না, এতে বিশ্বকে বাঁচাতে প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা ছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আশা করে, যারা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব ভাগ করে নেবে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সেটাই তুলে ধরবেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সারা দেশে ভূমিহীনদের ঘর দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা মানুষকে একটি বাড়ি একটি জীবন দিচ্ছি। আমরা বিশ্বকে দেখাব যে আমরা খুব ভালো কাজ করেছি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মূল ফোকাস হচ্ছে দেশটি শান্তি চায়। শান্তি স্থিতিশীলতা সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী, আজ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজনে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। এছাড়া এবারের অধিবেশনে দ্য ফিউচার অব ডিজিটাল কো-অপারেশন: বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স থ্রু সেইফ, ট্রাস্টেড অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং বহুপাক্ষিকতাবাদ খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ক আলাদা দুটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। দুটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন শেখ হাসিনা। প্রথম সভায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অংশ নিতে পারেন।

এর আগে যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য বিশ্বনেতার সঙ্গে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি লন্ডন ত্যাগ করেন। ওইদিন স্থানীয় সময় রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লন্ডনের স্টানস্টেড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট। একই দিন স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২৫ মিনিটে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানটি।

নিউইয়র্কের কর্মসূচি শেষে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসি সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী। অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসি থেকে রওনা হয়ে যুক্তরাজ্যে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করে অক্টোবর মধ্যরাতে তার দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন